Advertisement
Advertisement

Breaking News

জনতার কারফিউ অগ্রাহ্য

জনতার কারফিউ অগ্রাহ্য করে স্কুল খোলার সরকারি নির্দেশ, বিপাকে শিক্ষকরা

রবিবার স্কুল থেকে চাল, আলু বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

All schools in West Bengal should be open on Sunday.
Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 21, 2020 8:15 pm
  • Updated:March 21, 2020 8:15 pm

দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা সতর্কতার মাঝে ‘জনতার কারফিউ’ অগ্রাহ্য করার তুঘলকি ফরমান গেল প্রধান শিক্ষকদের কাছে। রবিবার রাজ্যের স্কুলগুলি খুলে রাখতে হবে। শনিবার জেলা স্কুল পরিদর্শকরা দ্বিতীয় দফায় এই নির্দেশ পাঠিয়েছেন।

করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকার বিস্তর ব্যবস্থা নিয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন বেড বাড়ানো হয়েছে। সরকারি কর্মীদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ৫০ শতাংশকে অফিস করতে বলা হয়েছে। স্কুল—কলেজ—বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পঠনপাঠন বন্ধ। উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে রবিবার গোটা দেশে ‘জনতার কারফিউ’ পালনের আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সকাল সাতটা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত খুব দরকার ছাড়া সবাইকে বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, আগামিকাল বাস—ট্রেন চলবে হাতে গোনা। দোকান বাজারের সিংহভাগ থাকবে বন্ধ। তাহলে রবিবার শিক্ষকরা স্কুলে যাবেন কী করে? অকুল পাথারে স্কুল শিক্ষকরা।

Advertisement

Advertisement

[আরও পড়ুন : ‘বড় অসহায় লাগছে’, ইটালিতে আটকে থাকা মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বাবার]

বেশিরভাগ প্রধান শিক্ষকই এই সরকারি আদেশনামা চিঠি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে দিনভর করোনা সতর্কতায় কাজ করে চলেছেন। একদিকে যখন রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে ‘লক ডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে তখন কোন সাহসে স্কুলশিক্ষা দপ্তর রবিবার স্কুলে যেতে বলে? এমনিতে রবিবার ছুটির দিন। আছে করোনা আতঙ্ক। তার উপরে প্রধানমন্ত্রীর আবেদন। সবমিলিয়ে খুব দরকার ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোবেন না কেউ। কিন্তু তারপরেও কেন স্কুলে যেতে বলা হচ্ছে?

রবিবার স্কুলে আসা নিয়ে দুই দফায় সরকারি নির্দেশ জারি হয়েছে। একটি শুক্রবার এবং অন্যটি শনিবার। প্রথমটিতে ডিআইরা উল্লেখ করেছেন, স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবের হোয়াটস অ্যাপ মেসেজ পেয়ে তাঁরা বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছেন। ডিআইরা উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মিড ডে মিল চালু রাখতে বলেছেন। তাই পড়ুয়া পিছু ২ কেজি করে চাল এবং আলু দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কারণে শনি ও রবিবার স্কুল খুলে রাখতে হবে। শনিবার ফের নির্দেশ জারি হয়। দ্বিতীয়বারের বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলশিক্ষা সচিবের উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশও এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মিড ডে মিল চালু রাখতে বলেছেন। চাল এবং আলু এদিন রাত দশটার মধ্যে অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে হবে। বাকি থাকলে রবিবার বিকেল তিনটের মধ্যে চাল এবং আলু বিতরণ করতে হবে। বিষয়টিকে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বেশিরভাগ স্কুলে এদিন চাল-আলু বিতরণ শুরুই হয়নি। প্রধানশিক্ষকরা জানিয়েছেন, “বেশি চাপ এলে আমরা বলে দেব, হ্যাঁ বিতরণ হয়ে গিয়েছে।”

[আরও পড়ুন : করোনা আতঙ্ক দূর করতে সচেতনতার পাঠ দিচ্ছেন সুপার সিস্টার]

রবিবার স্কুল খুলে রাখার নির্দেশের নিন্দা করেছেন ‘স্টেট ফোরাম ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি এ প্রসঙ্গে বলেন, “এত তাড়াহুড়ো কিসের বুঝতে পারছি না। একদিকে জমায়েত নিষিদ্ধ করতে বলছে। অন্যদিকে চাল—আলু দিতে বলছে। এত তাড়াতাড়ি এত খাদ্যসামগ্রী কি করে জোগাড় হবে।” রবিবার স্কুলে যাওয়ার নির্দেশে ক্ষোভ জানিয়েছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। সংগঠনের সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানিয়েছেন, “আমরা সরকারি নির্দেশের প্রতিবাদ করি। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত জনতার কারফিউ অগ্রাহ্য করা ঠিক নয়। আর তাছাড়া রবিবার গণপরিবহনে সমস্যা হবে। শিক্ষকরা কিভাবে স্কুলে পেঁৗছবেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ