কিংশুক প্রামাণিক, নামখানা: নতুন বছরে নতুন উপহার। কলকাতা থেকে সরাসরি চলে যাওয়া যাবে এবার বকখালি। আরও দ্রুত পার হওয়া যাবে কলকাতা থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার রাস্তা। হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর উপর বহু প্রতীক্ষিত সেতুর কাজ প্রায় শেষ। দুই পাড়ে তিন মিটার করে আর ছ’মিটার জুড়লেই ইতিহাস তৈরি হবে। যার ফলে নামখানায় এসে আর জেটিতে উঠতে হবে না। সরাসরি চলে যাওয়া যাবে বাংলার অনিন্দ্যসুন্দর পর্যটন ক্ষেত্র বকখালিতে। যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রেও সুন্দর যোগাযোগের মাধ্যম তৈরি হবে এই সেতুটি। বলতে গেলে দিঘার পর সৌন্দর্যের দিক থেকে দ্বিতীয় সমুদ্রসৈকতের রূপ নেবে এই পর্যটন ক্ষেত্র।
[বিশ্বের এই অদ্ভুত গির্জাগুলি দেখলে অবাক হবেন!]
নদীর উপর সেতুটির অংশ ৩৪০ মিটার। কিন্তু দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোড মেলালে সব মিলিয়ে ৩.৪ কিলোমিটার লম্বা। যেভাবে দ্বিতীয় হুগলি সেতু তৈরি হয়েছে, সেই একই পদ্ধতিতে এটি তৈরি হচ্ছে। বলা যায় এটি দ্বিতীয় হুগলি সেতুরই ছোট সংস্করণ। এই কাজ অনেক আগে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মাঝেরহাটের সেতু বিপর্যয়ের পর এই ব্রিজের কাজ থমকে যায়। একমাত্র সমস্যা ছিল ব্রিজ তৈরির সামগ্রী নিয়ে আসা। শেষে তাও হয়। কিন্তু তার পরই এই ব্রিজ চালু করে দিতে চাননি মমতা। তাঁর নির্দেশমতোই ব্রিজটির আয়ুর পরীক্ষা হয়। প্রথমে যেভাবে কাজ হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে কাজ এগোলে গঙ্গাসাগর মেলার আগেই হয়তো এটি উদ্বোধন হয়ে যেত। কিন্তু এখন যা খবর তাতে, ৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে এই ব্রিজ। তবে ব্রিজের পুঙ্খানুপুঙ্খ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সেখানে ট্রায়াল রান হবে। তার জন্য ব্রিজটি সম্পূর্ণরূপে চালু হতে জানুয়ারি মাঝামাঝি।
[বর্ষশেষের ছুটিতে ঘুরে আসুন সুন্দরবনের কাছে এই দুই নিরিবিলি জায়গায়]
বস্তুত, এই ব্রিজটি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রজেক্ট। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এটি। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করছেন মমতা। এর মধ্যে আজই নামখানায় প্রশাসনিক বৈঠক ছিল। এই মঞ্চেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন রাজ্য প্রশাসনের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক থেকে জেলা প্রশাসনের কর্তারাও। ছিলেন জেলার জনপ্রতিনিধিরাও। জেলার প্রশাসনিক কাজ কীভাবে চলছে, তার খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে বৈঠক হয়, তার কিছুদূরেই এই ব্রিজ। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী খবর নেন সেতুর কাজ কতদূর এগোল। নামখানার এই বৈঠকে হেলিকপ্টারে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে আবার ফিরে যাবেন সেখানেই। শুক্রবার সাগরে সভা করে ফিরবেন কলকাতা।