সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন তিনি বলতেন বাংলায় বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ পাবে তৃণমূল। এবার সেই স্লোগান কিছুটা বদলালেন। আলিপুরদুয়ারের সভায় বললেন, “বিজেপির টার্গেট বাঙালি তাড়ানো। ওরা ভোট এলেই ভাওতা দেয়, হিন্দু-মুসলিম করে। বাংলা থেকে বাঙালিকে তাড়ানো ওদের লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য সফল হতে দেব না। বাংলায় বিয়াল্লিশে শূন্য পাবে বিজেপি।” মমতা আত্মবিশ্বাসী, আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসই দিল্লিতে সরকার গড়বে। এদিন তিনি আরও একবার বলেন, মোদিবাবুর এক্সপায়ারি ডেট ওভার হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নতুন স্লোগান “অবুঝ নয়, সবুজ চাই।”
[আরও পড়ুন: ‘পাহাড় রক্ষায় বিজেপিকে হারান’, নির্বাচনী সভায় আহ্বান মমতার]
কেন্দ্রের শাসকদলকে আক্রমণ শানাতে ধর্মনিরপেক্ষতায় মূল অস্ত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন আরও একবার প্রমাণিত হল সেকথা। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “এবারে বিজেপিকে জেতালে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। বাবাসাহেব আম্বেদকরের সংবিধান থাকবে না। কারও স্বাধীনতা থাকবে না। গণতন্ত্র থাকবে না। কেউ কথা বলতে পারবে না। সংখ্যালঘুদের অধিকার থাকবে না। মোদি হিটলারের ঠাকুরদা।” ভোটের আগে সাম্প্রদায়িক বিভেদই একমাত্র হাতিয়ার বিজেপির, অভিযোগ মমতার। তিনি বলেন, “ওরা ভোটের আগে শুধুই হিন্দু-মুসলিম করে। ওদের বলে দিতে চাই, হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান সবাই আমার ভাই বোন। বিজেপির কথা শুনে ভুল রাস্তায় যাবেন না। ওরা শুধু বিভেদ ছড়ায়। পয়সা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করে।” রাজ্য পুলিশে রদবদল নিয়েও সরব মমতা। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির কথায় বদলানো হচ্ছে সব ভাল ভাল অফিসারদের। তিনি বলেন, “সব অফিসার বদলে দিন। তাতেও আমাকে বদলাতে পারবেন না। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলব, যৌথভাবে ভোট করুন। আমাদের ফোর্সও ভাল।”
[আরও পড়ুন: এখনও গ্রাহ্য হয়নি ইস্তফাপত্র, রানাঘাটের চিকিৎসক প্রার্থীকে নিয়ে বিড়ম্বনায় বিজেপি]
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘চৌকিদারি’কেও কাঠগড়ায় তোলেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, “আগে ছিল চাওয়ালা, এখন চৌকিদার হয়েছে। লোকে কিন্তু বলছে, এ চৌকিদার ঝুটা হ্যায়। চৌকিদার লুট লিয়া হ্যায়।” খানিকটা স্বভাববিরুদ্ধভাবে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থীর নাম করে তাঁকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার অভিযোগ, বিজেপি আলিপুরদুয়ারে দাঙ্গাবাজকে প্রার্থী করেছে। তিনি বলেন, “জন বারলা ডুয়ার্সে দাঙ্গা লাগিয়েছে, বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে, তরাইয়ে আগুন জ্বালিয়েছে। জন বারলাদের আগুন জ্বালাতে দেবেন না। বিজেপির কি আর প্রার্থী জোটেনি? দাঙ্গাবাজকে কেন দিল? ওরা দাঙ্গাবাজকে প্রার্থী করে আলিপুরদুয়ারে আগুন লাগাতে চাইছে। আমাদের প্রার্থী আপনাদের বাড়িতে আগুন লাগাবে না।”
[আরও পড়ুন: পাখির চোখ বাংলা, নির্বাচনী আবহে দক্ষিণবঙ্গে দশটির বেশি জনসভা মোদির]
শুধু বারলাকে আক্রমণ করাই নয়, আলিপুরদুয়ারে মমতাকে বেশ কিছু স্থানীয় ইস্যুতে সরব হতে দেখা গিয়েছে। তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিল আদিবাসীদের সমস্যা, বনবসতির সমস্যা এবং চা শ্রমিকদের সমস্যা। আলিপুরদুয়ার জেলার জন্য তৃণমূল সরকারের করা যাবতীয় প্রকল্পের খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের মত, আসলে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বুঝে গিয়েছেন, আলিপুরদুয়ারের লড়াইটা এবার কঠিন। অসম সংলগ্ন আসনটিতে বেশ প্রভাব বিস্তার করে ফেলেছে গেরুয়া শিবির। তাছাড়া বিজেপি প্রার্থী জন বারলাও বেশ জনপ্রিয়। তাই তাঁর ভাবমূর্তিতেও এদিন আঘাত করার চেষ্টা করেন মমতা।