সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: নীল পাড় সাদা শাড়ি, পায়ে চটি আর সাদা শাল। সাধারণত এটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচিত ছবি। কিন্তু এই শীতে দার্জিলিং পাহাড়ে তাঁকে দেখা গেল অন্য পোশাকে। শাড়ির উপর সাদা জ্যাকেটে একেবারে ভিন্ন রূপে জনসংযোগ সারলেন মমতা। তাঁকে কাছে পেয়ে আপ্লুত পাহাড়বাসীও।
মুখ্যমন্ত্রী এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। তিনি দার্জিলিংয়ে এসেছেন, খবর পেয়েই মঙ্গলবার সাতসকালে হাজির হয়েছিলেন একদল বাসিন্দা। মমতাও মিশে গেলেন পাহাড়ের আমজনতার সঙ্গে। তখন কে বলবে, তিনি পাহাড়ের বাসিন্দা নন?
[আরও পড়ুন: বাড়ির বাইরে ডেকে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গুলি, বাগনানে খুন তৃণমূল নেতা]
জনা কয়েক নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে সকালে রিচমন্ড হিল থেকে বেরিয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। সকালের ঠান্ডা কনকনে হাওয়া উপেক্ষা করে তিনি সিংমারি পৌঁছন। সেখান থেকে চিড়িয়াখানার সামনে দিয়ে চলে আসেন চৌরাস্তায়।স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে গল্প করেন।
এরপর যাওয়ার পথে রাস্তায় স্থানীয় একটি শিশুর দিকে নজর পড়ে তাঁর। তিনি শিশুটির অভিভাবককে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, পোলিও খাওয়ানো হয়েছে কি না। অভিভাবক জানান, তাঁরা সে সুযোগ পাননি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ডেকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্তার কাছ থেকে পোলিওর প্রতিষেধক নিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দেন। অভিভাবক থেকে উপস্থিত জনতা তখন বিহ্বল।
পথে যেতে যেতে দু’পাশে সার বেঁধে থাকা দোকানে কোনও একটায় ঢুকে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা কেমন আছেন, কোনও আতঙ্ক কাজ করছে কি না। কোনও সমস্যা হলে জেলা প্রশাসনকে জানানোর কথা বলে যান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর নেহরু রোড হয়ে রবার্টসন রোড এলাকা, অ্যলেক্সভিলা রোড হয়ে ভানুভবন। সেখান থেকে রিচমন্ড হিলে ফিরে যান মমতা। ঘন্টা দু’য়েক নির্ভেজাল সময় কাটিয়ে পাহাড়বাসীর মন জয় করে নেন রাজ্যের সর্বময় কর্ত্রী।
[আরও পড়ুন: বাড়ির বারান্দায় ফুটে উঠল দেবীর প্রতিচ্ছবি! দর্শন পেতে হুড়োহুড়ি স্থানীয়দের]
মঙ্গলবার গোর্খাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বসার কথা। অসমে দেড় লক্ষ গোর্খা এনআরসিতে বাদ যাওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কিত পাহাড়বাসী। বুধবার পাহাড়ে CAA-NRC’র বিরোধিতায় মুখ্যমন্ত্রী পদযাত্রায় নামছেন। তাঁরাও তাঁর সঙ্গে মিছিলে পা মেলাবেন।