রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: জাতীয় উদ্যানে খুন গন্ডার। উত্তরবঙ্গের জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে একটি গন্ডারকে খুনের ঘটনায় চোরাশিকারিদেরই দায়ী করছে বনদপ্তর। বুধবার গভীর রাতে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের ফিফটি ফোর বিট এলাকায় গন্ডারটিকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান। তার খড়গ কাটা ছিল বলে জানা গিয়েছে বনদপ্তর সূত্রে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রুটিন টহলদারির সময় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গিয়ে জঙ্গলের কোর এলাকায় একটি পূর্ণবয়স্ক গন্ডারের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন বনকর্মীরা। গন্ডারটির খড়গ কাটা ছিল। শরীরে গুলির ক্ষতও দেখা যায়। খবর পৌঁছয় আধিকারিকদের কাছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানেই গন্ডারের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। বনবস্তিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গভীর রাতে তাঁরা জঙ্গলের মধ্যে থেকে গুলির শব্দ পেয়েছিলেন। তাঁদের বয়ানের ভিত্তিতেই বন আধিকারিকরা একপ্রকার নিশ্চিত যে চোরাশিকারিদের গুলিতেই গন্ডারটির মৃত্যু হয়েছে এবং তার খড়গটি কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কফিনবন্দি হয়ে সাগরদিঘি ফিরল রফিকুলরা, কান্নায় ভেঙে পড়ল গোটা গ্রাম]
এ নিয়ে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের আধিকারিকরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন, ‘জলদাপাড়ায় একটা ঘটনা ঘটেছে। চোরাশিকারিদের হাতে মারা গিয়েছে একটি গন্ডার। আমাদের প্রাথমিক অনুমান, গুলি করে গন্ডারটিকে মারা হয়েছে। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবটা খতিয়ে দেখছি।’ তবে গন্ডারের মৃত্যুর পর থেকে ওই এলাকায় জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তাঘাটে চলছে কড়া টহলদারি। পর্যটকদের নির্দিষ্ট রুট ছাড়া অন্য কোনও পথে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যাতে চোরাশিকারিরা দ্রুত খুব দূরে পালিয়ে যেতে না পারে, সেই কারণেই এমন ব্যবস্থা নিয়েছে বনদপ্তর।
[আরও পড়ুন: স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও নেই রাস্তা, রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ভরসা ‘ডুলি’]
এর আগেও গন্ডার খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়ে উঠেছিল জলদাপাড়া এবং গরুমারা অভয়ারণ্য। ২০১৭ সালেই গরুমারায় চোরাশিকারিদের হাতে গন্ডার খুনের ঘটনায় তদন্ত করেছিল সিআইডি। জাতীয় উদ্যানে একাধিকবার এমন ঘটনায় বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা বড়সড় প্রশ্নের মুখে। সেইসঙ্গে চোরাশিকার রুখতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ দানা বাঁধছে।