ধীমান রায়, কাটোয়া: এবারে ভোট প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে উঠে এল কাটোয়ার মুখোশ শিল্প৷ নানা দলের প্রতীক আঁকা মুখোশের চাহিদা বাড়ছে। ডান, বাম-সব দলেরই। কাটোয়ার শিল্পী কার্তিক দাসের হাতে তৈরি মুখোশ ভোটের মরশুমে বাজারে রীতিমতো হিট।
[ আরও পড়ুন: হিলির সীমান্তবর্তী গ্রামে ভোটের হাওয়া বইছে তৃণমূলের পালে]
বয়স ৭৭ বছর৷ শরীরে অশক্ত, কাজ করতে গিয়ে হাত কাঁপে। কিন্তু এই বয়সেও তাঁর হাতের জাদু অটুট। সেই জাদু মিশিয়েই তৈরি করে যাচ্ছেন একের পর এক মুখোশ। বিশেষত ভোটের সময় কার্তিকবাবু চমক দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীকে মুখোশ বানিয়ে৷ ভাবনা একান্তই তাঁর নিজস্ব। ভোটের বাজারে এই অভিনব মুখোশ তৈরি করে বেশ লাভের মুখও দেখছেন কার্তিকবাবু। এই মুখোশ তৈরির মূল উপকরণ কাগজ ও আঠা। তারউপর নকশা এঁকে মুখোশ তৈরি করা হচ্ছে। কার্তিকবাবু জানিয়েছেন,প্রতি পিস মুখোশের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা৷ সব দলেরই প্রতীক আঁকা মুখোশ তৈরি হচ্ছে। তবে বাজারে চাহিদা বেশি তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির প্রতীক আঁকা মুখোশের। এমনই জানিয়েছেন কার্তিকবাবু।
[ আরও পড়ুন: হাত বাঁচাতে চিকিৎসকের পরামর্শেই গ্লাভস, বিতর্কের জবাব মিমির]
কাটোয়ার হরিসভা পাড়ার বাসিন্দা কার্তিক দাস এখনও টিকিয়ে রেখেছেন মুখোশ তৈরির শিল্পকে। বংশ পরম্পরায় এটাই পেশা তাঁদের। কার্তিকবাবু জানিয়েছেন, তাঁর তৈরি মুখোশ এখন মূলত মেলায় বিক্রি হয়। এছাড়া দুর্গাপুজোর সময় মণ্ডপ তৈরির কাজে অর্ডার থাকলে তৈরি করেন। নাটকের অনুষ্ঠানের জন্যও মাঝেমধ্যে বরাত পাওয়া যায়। তবে ভোটের মরশুমের রাজনৈতিক দলগুলির জন্য এই বরাত তাঁর উপরি পাওনা। এখনও শিল্পকর্মে নিমগ্ন কার্তিকবাবুর শুধু একটাই আক্ষেপ, ‘মৃত্যুর আগে রেখে যেতে পারলাম না কোনও উত্তরসূরী৷’ কারণ, আর্থিক অনটনের জন্য মুখোশ শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নতুন প্রজন্ম চলে গিয়েছে অন্য পেশায়৷ কাটোয়া, মঙ্গলকোট এলাকার মুখোশ শিল্পই এভাবে অবলুপ্তির পথে৷ তবে ভোটের বাজারে রাজনৈতিক মুখোশ ফের আশা জাগাচ্ছে৷
ছবি: জয়ন্ত দাস।