Advertisement
Advertisement

‘ভাগীরথীতে তলিয়ে যাব না তো?’ প্রমাদ গুনছেন নদিয়ার ৭ গ্রামের বাসিন্দারা

ভ্রূক্ষেপ নেই প্রশাসনের।

Nadia: Villagers  fear of losing everything in flood
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:August 2, 2018 8:04 pm
  • Updated:August 2, 2018 8:37 pm

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: ফের ভাগীরথীর ভাঙনের কবলে পড়তে চলেছে নদিয়ার চাকদহের সরাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। আপাতত সেই আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছেন ওই এলাকার অনেক পরিবার। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের সব স্তরে জানানো হয়েছে।  কিন্তু পাকাপাকি ভাঙন-রোধে কাজ হচ্ছে না। বহু মানুষ ইতিমধ্যেই তাদের বসতভিটে আর চাষের জমি খুঁইয়েছেন।  পাকাপাকি ভাঙ্গন রোধের দাবিতে সরব ওই এলাকার মানুষ ।

ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তারিনীপুর, রায়ডাঙ্গা, কালীপুর, উমাপুর, গাইনপুর, সরাটি দক্ষিণ গ্রামগুলির প্রচুর মানুষের এখন দিন কাটছে একটাই আতঙ্কে। কখন তাদের বাড়িঘর চলে যায় ভাগীরথীর গর্ভে। তাদের বক্তব্য, ‘ফের নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। তারিণীপুর ও রায়ডাঙ্গা গ্রামের দশটি পরিবার গত সাতদিনে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে পালানোর অপেক্ষায় রয়েছেন এখনও ৫০টি পরিবার।

Advertisement

[স্কুলে বসেই মদ্যপান, শাস্তির মুখে নবম শ্রেণির পাঁচ ছাত্রী]

স্থানীয়রা বলছেন, ‘ইতিমধ্যেই দশটি পরিবার বসতভিটে ছেড়ে অন্যত্র ঠাঁই নিয়েছেন। আমরাও যে কোনও মুহূর্তে সব ফেলে চলে যাব। গত দিন সাতেক ধরে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে ভাঙন রোধের নামে যে কাজ হয়, তাতে আদৌ পাকাপাকি সমাধান হচ্ছে না। আমরা চাই ,ভালো করে বড় বড় বোল্ডার ফেলে পাকাপাকি ভাঙন-রোধের ব্যবস্থা করা হোক। ‘যদিও ওইসব এলাকায়  ভাগীরথীর ভাঙনের ইতিহাস নতুন নয়, যার শুরু বহু বছর আগে থেকেই। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে থেকে দূর্গাপুর গ্রামের নাম প্রায় মুছে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ,’ধীরে ধীরে একসময় প্রায় গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এখনও অবধি কোনরকমে টিকে রয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল। ওই গ্রামের প্রায় ৪০০টি পরিবার ভিটেমাটি খুইয়ে বাধ্য হয়ে অন্যত্র ঠাঁই নিয়েছেন ।

Advertisement

[অভাবের শূন্য গোয়ালে হঠাৎ হাজির তিন গরু, খাবার জোটাতে বিপাকে কৃষক]

‘তারিনীপুর, কালীপুর, গাইনপুর থেকে সরাটি দক্ষিণ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার ৭০০ বিঘা জমি ধীরে ধীরে ভাগীরথীর গর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন ওই জমির মালিকেরা। কখন যে কার জমি হারাতে হবে, কেউ জানেন না। একরাশ দুশ্চিন্তা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে তাদের কাটছে সময়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রায় একমত স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ইসরাফিল হক। তিনি  জানান, ‘এটা একদম ঠিক, ভাগীরথীর পাড়ের জমি কখন যে চলে যাবে নদী গর্ভে, কেউ জানেনা। এই মুহূর্তে ৫০টি  পরিবার ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এর আগে দশটি পরিবার ভিটে ছেড়ে চলে গিয়েছে। কীভাবে তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি। পাকাপাকি ভাঙন রোধের জন্য ও জমি-হারাদের পূনর্বাসন দেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনিক সব স্তরেই জানিয়েছি। ‘রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পরদিনের ভোরের আলো দেখার জন্য এই মুহূর্তে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা ছাড়া আর উপায় -ই বা কী ভাঙ্গনের আশঙ্কায় আতঙ্কিত মানুষগুলোর !

ছবি: সুমিত মণ্ডল

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ