সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বিদ্যালয়ে শৌচাগার নেই, তাই স্কুল ছাড়ছে ছাত্রীরা। কন্যাশ্রী দিবসের আগে ছাত্রীদের দেওয়া এই তথ্যই উদ্বেগ বাড়িয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের। এই তথ্য হাতে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন৷ ২০১১-র সমীক্ষা রিপোর্ট খুঁজে বের করেন আধিকারিকরা। সেই রিপোর্টে দেখা যায়, তেরো থেকে আঠারো বছরের ছাত্রীদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি স্কুল ছাড়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এই রিপোর্টে দেখে চোখ কপালে উঠেছে জেলা প্রশাসনের।
[ আরও পড়ুন:বজ্রপাতে প্রাণ গেল বাবা-ছেলের, বিভিন্ন প্রান্তে বেড়েই চলেছে মৃত্যু ]
জানা গিয়েছে, ছাত্রীদের মধ্যে স্কুল ছাড়ার প্রবণতা রুখতে সম্প্রতি ‘গো টু ভিলেজ’ প্রকল্পে কন্যাশ্রীদের সঙ্গে আলাদা ভাবে সময় দিচ্ছে প্রশাসন। কন্যাশ্রীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে৷ এবং সেই আলোচনাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ কন্যাশ্রীরা জানিয়েছে, বিদ্যালয়ে শৌচাগার না থাকায় দিনের ছ’ঘণ্টারও বেশি সময় স্কুলে কাটানো কঠিন হয়ে যায়।সমস্যা আরও বাড়ে ঋতুর দিনগুলিতে।ওই সময় স্কুলে যায় না তারা। টানা পাঁচ–ছ’দিন অনুপস্থিত থাকে। প্রতি মাসে এই অনুপস্থিতির ফলে তারা স্কুলের পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যার কারণে পুরুলিয়ার কন্যাশ্রীদের মধ্যে বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা। আগামী ১৪ আগস্ট কন্যাশ্রী দিবস। তার আগে এমন তথ্য শুধু উদ্বেগ নয়, রীতিমতো চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের। যেখানে কন্যাশ্রী আজ বিশ্বের দরবারে সম্মান পেয়েছে। সেখানে শৌচাগার না থাকার কারণে কন্যাশ্রীরা স্কুল থেকে মুখ ফেরাচ্ছে, তাতে চরম অস্বস্তিতে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। এই উদ্বেগজনক তথ্য হাতে আসতেই, শৌচাগার না থাকা স্কুলের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক।
[ আরও পড়ুন: মিষ্টিতে মেলবন্ধন পতাকা-রাখির, স্বাধীনতা দিবসে নয়া আকর্ষণ বর্ধমানে ]
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “স্কুলে শৌচাগার না থাকার বিষয়ে কন্যাশ্রীরা যে তথ্য দিয়েছে, তা সত্যিই উদ্বেগের। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে। তাই কোন–কোন স্কুলে শৌচাগার নেই, তার তালিকা তৈরি করতে বলেছি। এরপরই শৌচাগার নির্মাণের কাজ শুরু হবে।” মানবাজার রাধামাধব শিক্ষায়তনের ছাত্রীরা প্রশাসনকে জানিয়েছে, স্কুলে শৌচাগার নেই। তাই ঋতুকালীন সমস্যায় তারা টানা পাঁচদিন স্কুল আসতে পারে না। একই কথা বলেছে ঝালদা দু’নম্বর ব্লকের বেগুনকোদরের কন্যাশ্রীরাও। প্রশাসনকে তারা জানিয়েছে, শৌচাগার না থাকায় তারা বাধ্য হয় ঋতুকালীন দিনগুলিতে বেগুনকোদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে। যে স্কুল কো-এড অথচ শৌচালয় নেই, সেখানেই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে কন্যাশ্রীরা।
ছবি: অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.