সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: দিনকয়েক আগেই শিরোনামে আসে ডেলোয় প্যারাগ্লাইডার ভেঙে পাইলটের মৃত্যুর ঘটনা৷ এই ঘটনার জন্য পাইলটকেই দায়ী করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷ তাঁদের দাবি, প্রথাগত ল্যান্ডিংয়ের পরিবর্তে অন্যভাবে অবতরণের চেষ্টাতেই ভেঙে পড়ে গ্লাইডারটি৷ এরপরই পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্যারাগ্লাইডিং৷ হতাশ অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের আশায় ডেলোয় ভিড় জমানো কয়েকশো পর্যটক।
[প্যারাগ্লাইডিং করতে গিয়ে পাহাড়ে দুর্ঘটনা, মৃত্যু পাইলটের]
সাধারণত গ্লাইডার নামানোর সময় চালকরা কয়েক পাক গোল করে ঘুরিয়ে গ্লাইডার নামান। তাতে হাওয়ায় ভারসাম্য রক্ষা করতে সুবিধা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দুর্ঘটনার দিন সরাসরি ঘুড়ির মতো নেমে আসছিল তার গ্লাইডারটি। তাতে হাওয়ার চাপে গ্লাইডারের কাপড় ছিঁড়ে যায়। ফলে আর ভারসাম্য রাখা যায়নি। দুর্ঘটনায় পাইলটের মৃত্যু হওয়ায় আর কোনওদিন আসল সত্যি জানা যাবে না বলেই আক্ষেপ স্থানীয়দের। প্যারাগ্লাইডার সংগঠনের সম্পাদক দীপেন তামাং বলেন, ‘‘প্রশিক্ষিত ও দক্ষ চালক ছিলেন পুরুষোত্তম। কীভাবে এমন হলে বোঝা যাচ্ছে না৷’’ হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘আমরাও চাই প্যারাগ্লাইডিং দ্রুত খুলুক। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিনিময়ে নয়। তাতে কিছুদিন দেরি হলেও ক্ষতি নেই।”
[জানেন, ছুটিহীন দেশের তালিকায় ভারত কত নম্বরে?]
পর্যটকদের নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখে প্যারাগ্লাইডিং দ্রুত খোলার দাবিতে সরব পর্যটন সংস্থাগুলি৷ ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন ও জিটিএ-র কাছে নিজেদের দাবিও জানিয়েছে ডুয়ার্স, তরাই, সিকিম-সহ উত্তরপূর্বের হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সদস্যরা। তবে ডেলো পাহাড়ের খাঁজে ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন কবে স্বাভাবিক হবে প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা? অনুমতি মিলবে কবে? সদুত্তর নেই জেলাশাসক ডঃ বিশ্বনাথের কাছেও। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এখনও কোনও খবর নেই। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হবে।” জিটিএ-র তরফে এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে চেয়ারম্যান বিনয় তামাং জানান, ‘‘নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামোগত ত্রুটি সারিয়ে তবেই ফের ডেলোর আকাশে উড়বে প্যারাগ্লাইডার।’’
[হেরিটেজ তকমা বাঁচাতে UNESCO-র সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছে ভারতীয় রেল]
এদিকে, চারদিনে কয়েকশো পর্যটক প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেননি৷ ডেলোতে বেড়াতে এসে প্যারাগ্লাইডারের চড়তে না পেরে হতাশ তাঁরা৷ এই পরিষেবা বন্ধ থাকায় পর্যটন ব্যবসাও প্রভাব পড়ছে৷ হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, অনেকেই নাকি প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা না পেয়ে এই এলাকায় বেশিদিন থাকতে চাইছেন না। তাই দ্রুত পরিষেবা ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব তাঁরাও৷