নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন এখনও নির্ধারিত হয়নি। অথচ দেওয়াল যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকে। তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপি ছন্দে, ছড়ায় মন কাড়তে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছে। ভোট প্রচারের এই আদি অস্ত্রে দুই রাজনৈতিক দল যে পিছিয়ে নেই এলাকায় ঘুরে তার প্রমাণ পাওয়া গেল।
[ সিপিএমের সন্ত্রাসের বলি করিমপুরের আনিসুরের মেয়ে জয়ী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ]
ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির ২৭টি আসনের মধ্যে বিরোধী বিজেপি ২৩টিতে প্রার্থী দিয়েছে। বামফ্রন্ট ২২টিতে লড়াই করছে। ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২১টি আসনের মধ্যে বিজেপি লড়াই করছে ৯৪টি আসনে। বামফ্রন্ট ৭৯টি আসনে লড়াই করছে। ফলে সারা জেলায় যেখানে নির্বাচন শূন্য পরিস্থিতি সেখানে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকে নির্বাচনী উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। একই দেওয়ালে শাসক ও বিরোধীদের দেওয়াল লিখন উপভোগ করছেন এলাকার মানুষ। বিজেপি লিখেছে “মা কাঁদছে, মাটি ফাটছে, মানুষ বলছে, অনেক হল ভুল, এবার পদ্মফুল।” একই দেওয়ালের পাশেই তৃণমূল লিখেছে, “এগিয়ে বাংলা, পিছিয়ে দেশ, মোদির জন্য উন্নয়ন শেষ।” আরেকটি দেওয়ালে বিজেপি লিখেছে, “পিছিয়ে বাংলা, এগিয়ে দেশ, তৃণমূলরাই করল বাংলাকে শেষ। প্রতিবাদী, পথচারী খাটে তারা জেল, আর গুণ্ডারা মিলে বিলি করে সাইকেল। মৌলানা মসজিদে দিচ্ছে টাকা ঢেলে, আতঙ্কবাদী তৈরি করছো দেশের কথা ভুলে।” সিপিএম লিখেছে, “নিজের ভোট নিজে দিন, ভোট লুট রুখে দিন। চিটফান্ডের টাকা লুঠ করা তৃণমূল সরকার, আর নেই দরকার।” এরকম একাধিক ছড়ায় ভরে উঠেছে দেওয়াল। মল্লারপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পাড়া, মদিয়ান, মেহেদিনগর, শিবপুর, বিরাজপুর, প্রচন্দ্রপুর কাহার পাড়ার দেওয়ালে দেওয়ালে ছড়ার ছড়াছড়ি।
[ প্রার্থী না পেয়ে অনিল বিশ্বাসের পাড়ায় বিজেপিকে সমর্থন সিপিএমের ]
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমস্ত হুমকিকে অতিক্রম করে এখনও আমরা টিকে রয়েছি। তাই ছড়া লিখে আমরা রাজ্যের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছি। এই ছড়া মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলবেই।” পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তৃণমূলের ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে দেওয়াল লিখন শেষ করেছি। ছড়ার মাধ্যমে মূল বিষয়টিকে মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ষাটের দশকে বামফ্রন্ট এই ছড়া লেখা শুরু হয়েছিল। এই ছড়াই দেশে ঝড় তুলে দিয়েছিল। তাই এখনও সেই রীতি বজায় রয়েছে।” সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী মহম্মদ গোলাম নবী বলেন, “তৃণমূল যেভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তা আমরা মানুষের সামনে তুলে ধরেছি। কিছুটা বাড়ি বাড়ি গিয়ে, আবার কিছুটা দেওয়ালে ছড়ার মাধ্যমে তুলে ধরছি।”