শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ‘ভূত’ আতঙ্ক দূর করতে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন বড় চৌধুরিপাড়ার নাউয়াপাড়া এলাকায় সচেতনতা প্রচারে নামল পুলিশ প্রশাসন৷ বাসিন্দাদের মন থেকে ভূত তাড়াতে রাখা হয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিরাদেরও৷
[মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট যুবকের]
সম্প্রতি সদর ব্লকের বড় চৌধুরিপাড়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ‘ভূতে’ ধরেছে বলে রটে যায়। ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয় বাকি পড়ুয়ারা। ধারাবাহিক প্রচারে ‘ভূত’ আতঙ্ক মুক্ত হয় ওই ছাত্রীর। এদিকে সেই আতঙ্ক মুক্ত হতে না হতেই ফের ‘ভূত’ আতঙ্ক ছড়াল পাশের গ্রাম নাউয়াপাড়ায়। স্থানীয় এক যুবতীকে ভূতে পেয়েছে বলে খবর রটতেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেতেই পুলিশ ও বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিরা গ্রামে গিয়ে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের সচেতন করেন। কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, “ভূত বলে কিছু নেই। সবটাই মনের ভুল। মানুষকে সচেতন করতে গ্রামে প্রচার চালানো হবে।”
[ভেজাল সস কারবারের পর্দাফাঁস বনগাঁয়, ধৃত মালিক]
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ নভেম্বর৷ তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক আচরণকে কেন্দ্র করে ভূতের আতঙ্ক ছড়ায় ওই স্কুলে৷ চৌধুরিপাড়া ও তার আশপাশের গ্রামে রটে যায় যে, স্কুল থেকে ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে ভূতে ধরেছে৷ ওই ছাত্রীর বাবা কাশিম আলি জানান, “স্কুল থেকে ফেরার পর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে মেয়ে। একা একাই হাসতে থাকে। সেই হাসির শব্দে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিল সকলের। হাসতে হাসতেই মেয়ে বলছিল, আমার জন্য প্রার্থনা কর, না হলে ক্ষতি করব।” জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে ওই স্কুলের পাশে আত্মহত্যা করেছিলেন এক মহিলা। চৌধুরিপাড়ার বাসিন্দাদের ধারণা, ওই মহিলার অতৃপ্ত আত্মাই ভর করেছে ওই ছাত্রীর উপরে। ফলে আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সকলের মধ্যে। সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ি থেকে বাইরে আসার সাহস দেখান না কেউ৷
[মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তার ফ্লেক্সে পানের পিক, উত্তেজনা বালুরঘাটে]
লোকমুখে এই ভূতের গল্প ছড়িয়ে পড়তেই ওই স্কুলমুখো হচ্ছে না চৌধুরিপাড়া ও আশপাশের গ্রামের পড়ুয়ারা৷ গোমস্তাপাড়া মোহনচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৫৫ জন। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার উপস্থিতির সংখ্যা ছিল মাত্র ১৮ জন। স্কুলের শিক্ষিকা জ্যোতি রায় বলেন, “বাচ্চাদের মনে আতঙ্ক চেপে বসেছে। আতঙ্ক দূর করতে স্কুল ছুটির পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের কর্মসূচি নেওয়া হবে৷ প্রচার করব আমরা৷” স্থানীয় এক মহিলা জানান, তাঁর বাড়ির পাশেই ঘটনাটি ঘটে। ফলে ভয়ে স্কুলে যেতে চাইছে না তাঁর বাড়ির বাচ্চাও। এই ঘটনার কিনারা হোক চাইছেন গ্রামের সকলেই। শাহজাহান চৌধুরি নামে এক বাসিন্দা জানান ওঝাই তাঁদের জানিয়েছেন যে, ওই ছাত্রীকে ভূতে ধরেছে৷ এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামে প্রশাসন৷