৯ আশ্বিন  ১৪৩০  বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

মাসখানেক আগে স্বামীর মৃত্যু, ট্রেন দুর্ঘটনা কাড়ল ভাই ও সন্তানকে, শোকে পাথর পুরুলিয়ার অর্চনা

Published by: Sayani Sen |    Posted: June 5, 2023 10:48 am|    Updated: June 5, 2023 12:32 pm

Purulia woman lost her son and brother in Coromandel Express accident । Sangbad Pratidin

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মাসখানেক আগে স্বামীর মৃত্যু। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা কেড়ে নিল একমাত্র সন্তান এবং ভাইকেও।  ভাগ্যের কঠিন পরিহাস আর মানতে পারছেন না পুরুলিয়ার অর্চনা পাল। সোমবার নিজের বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। ভাই এবং ছেলের দেহ ফিরছে বাড়িতে। 

পুরুলিয়ার হুড়ার হাটতলার বাসিন্দা অর্চনা পালের চোখের সামনে ভাসছে যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসের জেনারেল বগিতে শুক্রবার সন্ধেবেলার সেই ছবিটা। সুদূর ভেলোর থেকে নিজের টিউমারের চিকিৎসা করিয়ে প্রায় একমাস আগে স্বামীহারা অর্চনা দেবী ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দিয়েছিলেন ওই ট্রেনের মেঝেতে। আর বাবু অর্থাৎ ছোট্ট সুমন পাল ছিল অর্চনা দেবীর ভাই সঞ্জয় কুম্ভকারের কাছে সিটের উপরে অর্থাৎ বাঙ্কে শুয়ে। প্রায় হঠাৎ করেই প্রবল ঝাঁকুনিতে ট্রেনের বগি অন্ধকার। যাঁরা উপরে ছিলেন তাঁরা দমাদম শব্দে এদিক সেদিক পড়ছেন। আর চিল চিৎকার। তার মাঝেই ‘মাগো’ বলে বাবুর কান্না শুনেছিলেন অর্চনা দেবী। সেটাই এখন কানে বাজছে।

[আরও পড়ুন: ইনস্টাগ্রামে ‘আঙ্কেলজি’র প্রেম প্রস্তাব, মোক্ষম জবাব দিলেন স্বস্তিকাকন্যা অন্বেষা]

রবিবার সকালের দিকে বালাসোর মেডিক্যালের বিছানায় যখন শুয়ে অর্চনা দেবী। তখন শোনেন তাঁর ভাই আর নেই। সন্ধেবেলায় শোনেন তাঁর ছেলেকেও কেড়ে নিয়েছে ওই দুর্ঘটনা। উথালপাথাল অর্চনা দেবীর মন! বিড়বিড় করে বলছেন “বাবু কোলে আয়।” মাসখানেক আগে স্বামীকে হারানোর পর ছোট্ট বাবুর কাছে মা, বাবা যেন দু’জনেরই দায়িত্ব পালন করছিলেন অর্চনা দেবী। তাই ছেলেকে এক পলকও আলাদা করে রাখতেন না। নিজের চিকিৎসার জন্য ভেলোরে ভাইয়ের সঙ্গে ছোট্ট বাবুকে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এভাবে যে ভাই ও ছেলেক কেড়ে নেবে তা ভাবতেই পারছেন না অর্চনাদেবী। ভাবতে পারছেন না হুড়ার হাটতলায় থাকা ছোট্ট সুমনের দুই দিদি। তাই সুপ্রিয়া আর সুচিত্রাও টিভি খুলে শুধু কেঁদেই চলেছে। যদি ওই টিভি তার ভাইকে খুঁজে দেয়! সেই অপেক্ষায় শনিবার সকাল থেকে আর টিভি বন্ধ হয়নি। সকাল গড়িয়ে বিকাল। রাত পার হয়ে আবার পরের দিন বিকাল। টিভিতে নিউজ চ্যানেল চলছেই।

ওই ছোট্ট বাবুকে খুঁজতে তার দাদু অর্থাৎ অর্চনা দেবীর শ্বশুর অনিল পাল শনিবার বিকালের দিকেই বালেশ্বরে পা রাখেন। তিনি ওই মেডিক্যাল থেকে ভদ্রক। সেখান থেকে কটক ঘুরে ভুবনেশ্বর এইমসে এসে হুড়ার কেশরগড়ের বাসিন্দা সঞ্জয় কুম্ভকারের (৪০) নিথর দেহ ওই হাসপাতালের স্ক্রিনে দেখলেও বিকেল পর্যন্ত নাতির কোনও খোঁজ পাননি। তবে সন্ধেয় আসে দুঃসংবাদ। তাঁর কথায়, “শনিবার থেকে অনেক ঘুরেছি। রবিবার সন্ধেয় জানলাম বাবুটাও নেই।” কান্নায় ভাসছেন তিনি। ভুবনেশ্বর এইমসের মর্গেই অবশেষে খোঁজ মেলে সঞ্জয়ের। ‘বাবু’ও আর নেই। কফিনবন্দি অবস্থায় বাড়ি ফিরছে সে। 

[আরও পড়ুন: আর শিক্ষিকা নন, সুপারিশপত্র বাতিলের পরও লড়াই চালানোর বার্তা ববিতা সরকারের]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে