Advertisement
Advertisement
Visva Bharati university indirectly slams Nobel Laureate Amartya Sen

‘জমি দখলকারীরা দোষী ও অপরাধী’, নাম না করে অমর্ত্যকে খোঁচা বিশ্বভারতীর

বিশ্বভারতীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সর্বত্র সমালোচনার ঝড়।

Visva Bharati university indirectly slams Nobel Laureate Amartya Sen । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 6, 2023 9:01 pm
  • Updated:July 6, 2023 9:02 pm

দেব গোস্বামী, বোলপুর: যতই জগৎ বিখ্যাত হোন, জমি দখলকারী হিসেবে বিশ্বভারতীর দৃষ্টিতে তিনি দোষী এবং অপরাধী। প্রবীণ অর্থনীতিবিদ এবং নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের নাম না করে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর এমন সময় জারি করা হয় এই বিস্ফোরক বিজ্ঞপ্তি, যখন কিনা শান্তিনিকেতনেই রয়েছেন অমর্ত্য সেন। বৃহস্পতিবার, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিকের প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে নতুন করে বিতর্ক উঠেছে।জোর করে বিশ্বভারতীর জায়গা দখল করে রয়েছেন অমর্ত্য সেন। ফের বিস্ফোরক দাবি বিশ্বভারতী কতৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী,আশ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষকদের বড় অংশ এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র।

“আমাকে অপমান করা এত সহজ নয়। অপমান যতই থাকুক, সেটা গ্রাহ্য করা আমার উপরেই নির্ভর করে।কে কি বললেন সেটা আমার কাছে খুব বড় কিছুই নয়”, বুধবার বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’তে বসে কথা বলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তারই ফলশ্রুতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিস্ফোরক প্রেস বিজ্ঞপ্তি। বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “বিশ্বভারতী কাউকে অপমান করে না। অপমান করার ইচ্ছাও পোষণ করে না। জগৎ বিখ্যাত শিক্ষাবিদ অন্যায়ভাবে বা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্বভারতীর জমি দখল করবে। বিশ্বভারতীর প্রশাসন যেকোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না। নিজের উদ্দেশ্য থেকে এক পাও সরবে না।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রচারে হেনস্তার শিকার হিরো আলম, আওয়ামি লিগের কর্মীরা মারধর করল অভিনেতাকে!]

বিশ্বভারতীর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অমর্ত্য সেনের নাম না করে বলা হয়, “পরিযায়ী পরিব্রাজক। বিশ্বভারতীতে চলমান অশান্ত পরিবেশের ফসল তুলেছেন। বিশ্বভারতীকে পণ্যদ্রব্য করে ফায়দা লুটেছেন। এইসব মেকি রাবীন্দ্রিকদের যাতে শান্তিনিকেতনের পবিত্র স্থানে স্থান না হয় তার জন্য বিশ্বভারতী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সামাজিক প্রতিপত্তি আছে, তাই বিশ্বভারতীকে অবলীলাক্রমে শোষণ করে যাচ্ছেন। যতই জগৎ বিখ্যাত হন, জমি হরপকারী হিসেবেই বিশ্বভারতীর দৃষ্টিতে তিনি দোষী এবং অপরাধী।” বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পরেই বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, আশ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষকদের বড় অংশ এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কিছু জমি অধ্যাপক সেন ভোগ করছেন, অপরাধ ধরে নিয়ে বিশ্বভারতী তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করেছে এবং অপমানজনক ব্যবহার করে চলেছে। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক সেনকে পৈতৃক গৃহ থেকে উৎখাত করতে উদ্যত হয়েছে, এই বিজ্ঞপ্তি আমাদের মাথা হেঁট করে দিয়েছে।”

Advertisement

বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত নিন্দনীয়। ৯২ বছর বয়সের একজন প্রবীণ অর্থনীতিবিদকে ক্রমাগত আক্রমণ করা হচ্ছে।” পড়ুয়া শুভনাথ, বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”উপাচার্যের বিদায় ঘন্টা বেজে উঠেছে। মাত্র আর কয়েক মাস বাকি,মাথা ঠিক রাখতে পারছেন না। বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদকে অপমান করে বিজেপির কাছে ভাল হতে চাইছেন। প্রতিটি দেশবাসীর উচিত এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।” অন্যদিকে অধ্যাপক সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন,”বিশ্বখ্যাত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা যেভাবে ক্রমাগত অপদস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তার সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও মর্যাদাহানি কর মন্তব্য করে চলেছেন তাকে নিন্দা করার কোন ভাষা বোধহয় যথেষ্ট নয়। একথা ভাবতেও লজ্জা হয় যে, তিনি রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের বিশ্বভারতীর উপাচার্য। সৌজন্যহীন, অভদ্র এবং অন্যায় আচরণ বিশ্বের কাছে ভারতের মাথা নিচু করে দিচ্ছে। অমর্ত্য সেনের মতো ব্যক্তিত্বকে মর্যাদা রক্ষা করতে সব স্তরের মানুষের প্রতিবাদে মুখরিত হওয়া প্রয়োজন।”

[আরও পড়ুন: ফলাফলের ১০ দিন পরও রাজ্যে থাকুক কেন্দ্রীয় বাহিনী, কমিশনকে নির্দেশ হাই কোর্টের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ