সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘দলীয় নেতাদের হিংসাত্মক মন্তব্যের জেরে দিল্লি নির্বাচনে হার হয়েছে বিজেপির।’ নির্বাচনের ফলপ্রকাশের দু’সপ্তাহ পর বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করলেন দিল্লির বিজেপি প্রধান মনোজ তিওয়ারি। তাঁর কথায়, “নির্বাচনের আগেই আমি হিংসাত্মক মন্তব্যের নিন্দা করেছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এধরণের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন।” এমনকী যারা এধরণের মন্তব্য করেন, তাদের নির্বাচনে লড়াই অধিকার বাতিল করার পক্ষেও সওয়াল করেন মনোজ।
প্রসঙ্গত, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরওয়াল ও শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতারা। ফলে নির্বাচন কমিশনের কোপেও পড়েছিলেন কয়েকজন নেতাও। নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায় দিল্লিতে মাত্র ৮টি আসন পায় বিজেপি। এরপর থেকেই দিল্লিতে হারের কারণ নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে।
[আরও পড়ুন : তামিলনাড়ু বিজেপির চমক, গেরুয়া শিবিরে যোগ বীরাপ্পনের মেয়ের]
নির্বাচনী প্রচার গিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ‘সন্ত্রাসবাদি‘ বলে কটাক্ষ করেছিলেন বিজেপি নেতা পরবেশ বর্মা। এ প্রসঙ্গে তিওয়ারি বলেন, “নির্বাচনের আগেই আমি ওই মন্তব্যের নিন্দা করেছি। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরও একই ধরণের মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্ত্বব্যেরও তীব্র নিন্দা করে দিল্লি বিজেপির প্রধান মনোজ তিওয়ারি বলেন, “যে প্রসঙ্গেই বলা হোক না কেন, হিংসাত্মক মন্তব্যের ফল নির্বাচনে ভুগতে হয়েছে দলকে।”
এদিকে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র আর এক কাঠি উপরে উঠে CAA বিরোধী আন্দোলনকারীদের গুলি করার স্লোগান তুলেছিলেন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি জানি না কবে তিনি এহেন মন্তব্য করেছেন। তবে আমি মনে করি হিংসাত্মক মন্তব্য সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা উচিৎ।” একইসঙ্গে মনোজের দাবি, যাঁরা হিংসাত্মক মন্তব্য করবেন, তাঁদের নির্বাচনে লড়াইয়ের অধিকার চিরতরে বাতিল করা হোক। নির্বাচনে প্রচারে শাহিনবাগকে হাতিয়ার করেছিল বিজেপি। সেই অভিযোগ উড়িয়ে মনোজ তিওয়ারি দাবি করেন, “বিজেপি নয়, বিরোধীরাই শাহিনবাগকে নির্বাচনী ইস্যু বানিয়ছিল।” ইতিপূর্বে দিল্লিতে বিজেপির প্রচারের নিন্দা করেছিলেন RSS নেতৃত্বও।
[আরও পড়ুন : একাধিক দেশে নাম ভাঁড়িয়ে আত্মগোপন, অবশেষে জালে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন রবি পূজারি]
এদিন তিনি কেজরিওয়ালকেও একহাত নেন। মনোজের কথায়, “আমার লোকসভা কেন্দ্রের সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠান থেকে আমাকে মেরে তাড়ানো হয়েছিল। তাহলে কী করে কেজরিওয়াল সকলের মুখ্যমন্ত্রী হন?” প্রসঙ্গত, তৃতীয়বারে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওযার পরই অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, “আপ, বিজেপি, কংগ্রেস-দলমত নির্বিশেষে আমি সকলের মুখ্যমন্ত্রী।” এদিন সেই মন্তব্যের পালটা সমালোচনা করলেন মনোজ।