সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের কথা। হায়দরাবাদে গণধর্ষিতা হন এক পশু চিকিৎসক। সপ্তাহ খানেক বাদে সেই ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় পালাতে গিয়ে পুলিশের এনকাউন্টারে খতম হয় অভিযুক্তরা। গোটা ঘটনায় সেই সময় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। সেই ঘটনাই এবার উঠে আসতে চলেছে সেলুলয়েডে। এ নিয়ে রামগোপাল ভার্মা সামশাবাদের অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন। শোনা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই নাকি ছবির কাজ শুরু করবেন তিনি।
পরিচালক জানিয়েছেন, হায়দরাবাদের ওই ঘটনা গোটা দেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। গণধর্ষণের প্রতিবাদে পথে নেমেছিল আমজনতা থেকে বুদ্ধিজীবীরা। ঘটনাটি তাঁকেও নাড়িয়ে দেয়। তাই তিনি এ নিয়ে ছবি করার কথা ভাবেন। আর ছবি তৈরি করতে গেলেই দরকার গবেষণার। সেই রিসার্চ ওয়ার্ক করতেই মুম্বই থেকে সামশাবাদ যান তিনি। কথা বলেন পুলিশের সঙ্গে। ঠিক কী হয়েছিল সেদিন, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এনকাউন্টার নিয়েও কথাবার্তা বলছেন মামলার দায়িত্বে থাকা অফিসারদের সঙ্গে। চিত্রনাট্যে যাতে বাস্তবধর্মী হয়, তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক। সমস্ত গবেষণা মিটলে তবেই চিত্রনাট্য লেখার কাজে হাত দেবেন তিনি।
[ আরও পড়ুন: ‘প্লাস্টিক সার্জারির জন্য টাকা জমাচ্ছি’, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন এমন পোস্ট করলেন সৃজিত? ]
নভেম্বর মাসে ঘটে ঘটনাটি। সামশাবাদ টোলপ্লাজার কাছে স্কুটি রেখে অন্য এক চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে যান হায়দরাবাদের তরুণী পশু চিকিৎসক। রাত নটা নাগাদ স্কুটি নিতে গিয়ে দেখেন টায়ার পাংচার হয়ে গিয়েছে। তখনই তাঁর কাছে দু’জন যুবক এগিয়ে আসে। স্কুটির চাকা সারিয়ে দেওয়ার কথা বলে। বাধ্য হয়ে ওই যুবকদের বিশ্বাস করেন তিনি। টায়ার পাংচার সারাতে নিয়ে যাওয়ার অছিলায় স্কুটিটি নেয় দুই যুবক। সেই সময় টোলপ্লাজাতেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন তরুণী। যদিও অল্প সময়ের মধ্যেই স্কুটি নিয়ে ফিরে আসে দু’জনে। কোনও গ্যারেজ খোলা না থাকায় স্কুটি টায়ার সারানো সম্ভব হয়নি বলেও জানায় ওই যুবকেরা। ইতিমধ্যেই ফোনে বেশ কয়েকবার বোনের সঙ্গে কথা বলেন চিকিৎসক। তিনি জানান, তাঁর ভয় করছে। এরপরই ফোন সুইচড অফ হয়ে যায় তাঁর। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে পরিজনদের। পুলিশের দ্বারস্থ হন চিকিৎসকের বাবা। অভিযোগ, পুলিশের গড়িমসিতে প্রায় গোটা রাত কেটে যায়। পরেরদিন সকাল টোলপ্লাজা থেকে সামান্য দূরে একটি ব্রিজের নিচ থেকে তরুণীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চার যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, পরিকল্পনামাফিক স্কুটির টায়ার পাংচার করে তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। মৃত্যুর পরেও তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় বলেই তদন্তে স্বীকার করে নেয় অভিযুক্তরা। গত ৬ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনা পুনর্নির্মাণে যায় পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, পুনর্নির্মাণের সময় আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল ওই চারজন। তাই তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। সেদিনই এনকাউন্টারে খতম করা হয় গণধর্ষণে অভিযুক্তদের।