Advertisement
Advertisement

অগ্নিমূল্যে নাভিশ্বাস, বিদেশ থেকে সাত দিনে ২১ হাজার টন পিঁয়াজ আনছে কেন্দ্র

সরকার ইতিমধ্যেই মিশর ও তুরস্ক থেকে পিঁয়াজ আমদানি করার চুক্তি করেছে।

Centre to Import 21K Ton onion from Egypt and Turkey
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 6, 2019 9:04 am
  • Updated:December 6, 2019 9:04 am

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: পিঁয়াজের অগ্নিমূল্য নিয়ে সংসদ থেকে সর্বত্র প্রবল সমালোচনার মুখে কেন্দ্রের তরফে পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নামলেন স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দেশের অধিকাংশ শহরেই পিঁয়াজের দাম একশো ছাড়িয়েছে। কোথাও আবার দেড়শো ছুঁইছুঁই। পিঁয়াজের দাম যাতে আর না বাড়ে, তা নিশ্চিত করাই এখন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই বৃহস্পতিবার মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক ডেকে বিদেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে কতটা অগ্রগতি হয়েছে এবং পিঁয়াজের দেশীয় সরবরাহের অবস্থা খতিয়ে দেখেছেন শাহ।

এর আগেও তিনি পিঁয়াজ নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলেন। সেখানে বিদেশ থেকে যাতে সহজেই পিঁয়াজ আমদানি করা যায়, সেই বিষয়টির উপর জোর দিয়েছিলেন। তাতে বাজারে পিঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং দামও কমবে বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে এখনও কাজ হয়নি তা পিঁয়াজের ক্রমবর্ধমান দাম দেখেই মালুম হচ্ছে। সরকার ইতিমধ্যেই মিশর ও তুরস্ক থেকে ২১ হাজার টন পিঁয়াজ আমদানি করার চুক্তি করেছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা পিঁয়াজ যাতে তাড়াতাড়ি দেশে পৌঁছয় তার জন্য সরকার নিয়মাবলি শিথিল করেছে বলেও জানা গিয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘আমি খুব একটা পিঁয়াজ-রসুন খাই না’, নির্মলার মন্তব্যে সংসদে হাসির রোল]

এদিনের বৈঠকে এই সমস্ত বিষয়ের কাজ কতটা এগিয়েছে তার বিশদ রিপোর্ট নিয়েছেন শাহ। সঙ্গে কীভাবে বাজারে পিঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি করা যায় সেই রাস্তাও বৈঠকে খোঁজা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পি কে সিনহা উপস্থিত ছিলেন। তবে শারীরিক কারণে থাকতে পারেননি খাদ্য ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। তাঁর দপ্তরের সচিব অবিনাশ শ্রীবাস্তব বৈঠকে হাজির ছিলেন। মজুতদারি বন্ধে খুচরো বিক্রেতারা ৫ টন এবং পাইকারি বিক্রেতারা ২৫ টনের বেশি পিঁয়াজ রাখতে পারবেন না বলে নিয়ম করা হয়েছে বলে জানান শ্রীবাস্তব।

Advertisement

রামবিলাস এদিন বিকেলের বৈঠকে হাজির না থাকতে পারলেও সরকার পিঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ করেছে বলে একগুচ্ছ টুইট করেন। সেখানে পিঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসাবে দেশে ফলন কম থেকে শুরু করে পিঁয়াজের কালোবাজারি রুখতে কেন্দ্র কী কী পদক্ষেপ করেছে এ সমস্ত তুলে ধরেছেন। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, ‘‘পিঁয়াজের সরবরাহ সহজ করার জন্য এমএমটিসি মিশর থেকে ৬ হাজার ৯০ টন এবং তুরস্ক থেকে ১১ হাজার টন পিঁয়াজ আমদানি করছে। যা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে পাওয়া যাবে। তুরস্ক থেকে আরও ৪ হাজার টন পিঁয়াজ জানুয়ারির মাঝামাঝি বাজারে চলে আসবে। এছাড়াও ৫ হাজার টন করে তিনটি নতুন টেন্ডারও ডাকা হয়েছে।’’ আমদানি করা পিঁয়াজ এক সপ্তাহের মধ্যেই চলে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে নাফেড থেকে শুরু করে মাদার ডেয়ারির বুথ থেকেও সরকার গ্রাহকদের সস্তায় পিঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা করেছে বলেও লিখেছেন পাসোয়ান।

[আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের সুফল বাংলা স্টল থেকে ২০ কেজি পিঁয়াজ লুট, খালি হাতে বাড়ির পথে ক্রেতারা]

সরকারের তরফে পিঁয়াজের অগ্নিমূল্য আটকানোর চেষ্টা করা হলেও তা সফল না হওয়ায় প্রবল সমালাচনার মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রকে। বৃহস্পতিবার, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা সংসদে সরব হয়েছেন। কংগ্রেস সংসদ চত্বরে ধরনাও প্রদর্শন করেছে। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধি সরকারের ব‌্যর্থতা বলে আক্রমণ করেছেন। শুধু পিঁয়াজই নয়, মূল্যবৃদ্ধি দেশে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। কেন্দ্র সরকারের আইন প্রয়োগ করে পিঁয়াজ মজুত করে রাখার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও দাবি করেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মূল্যবৃদ্ধি কেন হচ্ছে, তা দেখার জন্য বাজারগুলি ঘুরে দেখেন। দেশের অন্য মুখ্যমন্ত্রীরাও সেই রাস্তা অবলম্বন করতে পারেন বলেও পরামর্শ দিয়েছেন সুদীপবাবু।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ