Advertisement
Advertisement

Breaking News

Fraud

সাবধান! বুস্টার ডোজের ওটিপির নাম করে আসরে প্রতারক চক্র, ফাঁকা হচ্ছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের কাছে গিয়েছে এমন ফোন কল।

Frauds trying to take money in the name of vaccination registration | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:January 8, 2022 11:34 am
  • Updated:January 8, 2022 12:13 pm

সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: “নমস্কার, জেলাশাসকের অফিস থেকে বলছি। আপনার তো দু’টি ডোজই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। জানেন কি বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হচ্ছে…! আমরা নাম রেজিস্ট্রেশন করানোর জন্য ফোন করেছি…। আপনার ফোনে একটি ওটিপি যাবে, ওটা দিন রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে।” এই ফোন কলে যদি সাড়া দিয়েছেন, তবে হাতে কোভিডের ভ্যাকসিনের তৃতীয় সূচ না ফুটলেও আপনার বুকে লাগবে জোর কা ঝটকা। একটু বাদেই ফোনে আসতে শুরু করবে একের পর এক এসএমএস। চোখের সামনে দেখতে পাবেন কীভাবে আপনারই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার অনেক কষ্টে সঞ্চয় করা টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে!

সরকার, বিশেষজ্ঞরা চাইছেন বুস্টার ডোজকে কোভিডের বিরুদ্ধে অস্ত্র করতে। কিন্তু তার আগেই বুস্টার ডোজকে অস্ত্র করে নিরীহ মানুষকে আক্রমণ করছে একদল দুষ্কৃতী। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্লক হয়ে যাওয়া, মোবাইলের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ – ইত্যাদি নানা ধরনের ধাপ্পাবাজিতে মানুষ এখন সতর্ক হয়ে গিয়েছে। তাই নতুন পথ খুঁজে বার করেছে সাইবার দুষ্কৃতীরা। দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অনেক মানুষ ইতিমধ্যেই এই ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, কেন্দ্রের ‘হর ঘর দস্তক’ কর্মসূচি সফল করতে বাড়ি বাড়ি টিকাকরণ করতে যাওয়া আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের পড়তে হচ্ছে ক্ষোভের সামনে। খবর এসে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছেও। যুগ্ম স্বাস্থ্যসচিব লব আগরওয়াল এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “ভাসা ভাসা কিছু ঘটনা কানে এসেছে। বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। বিষয়টা দেখছি। এর বেশি এখনই কিছু বলতে পারব না।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “১০ জানুয়ারি থেকে যাঁরা প্রিকশন ডোজ নিতে পারবেন, তাঁদের নথিভুক্ত মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে মনে করাবে কেন্দ্রই।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা টিকার প্রিকশন ডোজের জন্য লাগবে না রেজিস্ট্রেশন, জেনে নিন খুঁটিনাটি তথ্য]

দিল্লি পুলিশের সাইবার বিভাগের ডিসিপি কেপিএস মালহোত্রা এই প্রসঙ্গে বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে বোকা বানানোর নতুন নতুন পথ খোঁজে এই ধরনের অপরাধীরা। ওমিক্রন, টিকার মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলিকে এখন হাতিয়ার করেছে ওরা। আমাদের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। দিল্লি পুলিশের টিম পুরোদমে এই নিয়ে কাজ করছে। সবাইকে একটাই অনুরোধ, গোপন কোনও তথ্য তো কখনও কাউকে দেবেনই না, সন্দেহজনক অন্য কিছু নজরে এলেও সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দিন।” লালবাজার সাইবার সেলের এক আধিকারিক জানালেন, “শুধু দিল্লি কেন, মুম্বইয়েও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এখনও অবশ্য আমাদের রাজ্যে এই অভিযোগ নেই। তবু আমরা সতর্কতামূলক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি।”

Advertisement

এই ধরনের ভুয়ো ফোন এসেছে পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরী অঞ্চলের বাসিন্দা প্রশান্ত ঠাকুরের কাছেও। অভিজ্ঞতা ভাগ করতে গিয়ে বললেন, “বুস্টার ডোজের কথা বলে ডিএম অফিসের নাম করে একটা ফোন আসে। প্রথমে ওরা আমার ঠিকানা জানতে চায়। তখনই সন্দেহ হয়। নাম ও মোবাইল নম্বর যখন আছে, ঠিকানাও থাকা উচিত। এরপরই বলে ফোনে ওটিপি আসবে, সেটা ওদের দিতে। তখন অস্বীকার করে বলি, আপনাদের অফিসে যাচ্ছি, সামনাসামনি ওটিপি দেব। সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দেয়।” নিউ অশোকনগর এলাকার আশাকর্মী রঞ্জু মিশ্র দুঃখের সঙ্গে বলছিলেন, “প্রত্যেককে সুরক্ষিত রাখতে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা দিচ্ছি। অথচ কিছু বদমায়েশের জন্য আমাদের সঙ্গে উলটোপালটা ব্যবহার করছেন লোকজন। প্রথমে বুঝিনি। এখন যখন কিছু কিছু ঘটনা শুনছি, তখন ভাবছি ফতুর হয়ে গিয়েই আমাদের সঙ্গে অমন ব্যবহার করছেন। কিন্তু আমরা কী করতে পারি বলুন? কী জানি, কবে হয়তো আমাদের ধরে আটকে রাখবে বা মারধর করবে।”

[আরও পড়ুন: COVID-19 Update: দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্ত ১ লক্ষ ৪১ হাজার পার, সর্বোচ্চ সংক্রমিত ৫ রাজ্যের মধ্যে বাংলাও]

কোভিড টিকার রেজিস্ট্রেশন করানোর সময় রেজিস্টার্ড মোবাইল ফোনে একটি বিশেষ কোড আসে। সেটিকে হাতিয়ার করেই বুস্টার ডোজের ওটিপির ফাঁদ পাতছে এই প্রতারকরা। নিজেদের অজান্তেই যাতে পা দিয়ে ফেলছেন অনেক সাধারণ মানুষ। এক শত্রুর থেকে বাঁচতে গিয়ে সর্বস্ব খোয়াতে হচ্ছে অচেনা শত্রুর কাছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ