সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লড়াই অসম। একদিকে সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) সমর্থন ধন্য মল্লিকার্জুন খাড়গে। অন্যদিকে কংগ্রেসের অন্দরের ‘বহিরাগত বাবু’। একজন কয়েক দশক কংগ্রেসের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, দিল্লির রাজনীতির মারপ্যাঁচ যার নখদর্পণে। অপরজন দিল্লি তো দূর, নিজের রাজ্য কেরলের দলীয় রাজনীতিতেও নিজের উত্তরণ ঘটাতে পারেননি সেভাবে। তবে এসব সত্ত্বেও লড়াইয়ের ময়দানে আছেন শশী থারুর। তিনি যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা।
তবে খাড়গে হাইকম্যান্ডের প্রার্থী বলে শুধু নয়, তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এমনিতেও পিছিয়েই শুরু করতে হত থারুরকে (Shashi Tharoor)। কারণ, থারুর কোনওদিনই তথাকথিত সংগঠনের লোক নন। দলের গঠনকাঠামোতে কাজ করার অভিজ্ঞতা তেমন নেই। কংগ্রেসের (Congress) অন্দরে তিনি পরিচিত হিসাবে সুশিক্ষিত বাবু হিসাবেই। যিনি তথাকথিত এলিট ক্লাসের প্রতিনিধি। সেভাবে সাধারণ জনমানসে তাঁর তেমন প্রভাব নেই। থারুরকে নিজেদের প্রতিনিধি হিসাবে মনেও করেন না নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীরা। তাছাড়া বিতর্ক তাঁর নিত্যসঙ্গী। এর আগে একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনামে এসেছেন তিনি। এমনকী মনোনয়ন দেওয়ার পর যে ইস্তাহার তিনি প্রকাশ করেছেন, তাতেও ভারতের ‘বিকৃত’ মানচিত্র প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ হেন বিতর্কিত ব্যক্তিকে দলের সভাপতি হিসাবে কংগ্রেস কর্মীরা চাইবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
থারুর অবশ্য নিজের দিক থেকে চেষ্টার ত্রুটি করছেন না। তিনি বারবার দাবি করছেন, সোনিয়া গান্ধী তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে খুশি। এমনকী কংগ্রেসের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী ভোট প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষ থাকবেন বলেও দাবি করেছেন থারুর। শুক্রবারও শশী বলেন, “সোনিয়াজির (Sonia Gandhi) আশীর্বাদ নিয়েছি। উনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন তাঁর কোনও প্রার্থী নেই। উনি নির্বাচনে নিরপেক্ষ।” শুধু তাই নয়, এদিন গান্ধীদের ভূয়সী প্রশংসাও করতে শোনা গিয়েছে থারুরকে। তিনি এদিন বলছেন,”কংগ্রেসের ডিএনএ এবং গান্ধীদের ডিএনএ একই।” আসলে থারুর মরিয়া চেষ্টা করে যাচ্ছেন গান্ধীদের নেকনজরে আসতে। কিন্তু ‘ম্যাডাম’ সোনিয়ার পছন্দ যে খাড়গেই, সেটাও কারও কাছে গোপন নেই। খাড়গে নিজে প্রার্থী হতে রাজিই ছিলেন না। ম্যাডামের ইচ্ছাতেই প্রার্থী হতে হয় তাঁকে। সুতরাং হাজার চেষ্টা করলেও সোনিয়ার সমর্থন থারুর পাবেন না।
এতদিন থারুর নিজেকে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তথাকথিত সেই জি-২৩ (G-23) গ্রুপ আর নেই। উলটে তাঁরাও সায় দিয়েছেন হাইকম্যান্ডের প্রার্থীতেই। খাড়গের প্রস্তাবক হিসাবে সই করছেন মুকুল ওয়াসনিক, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারী, পৃথ্বীরাজ চৌহানের মতো জি-২৩ নেতারা। সুতরাং, বিক্ষুব্ধদের সমর্থনও আশা করতে পারবেন না থারুর। ফলে সব দিক থেকেই লড়াইয়ের আগে পিছিয়ে পড়ছেন তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.