Advertisement
Advertisement

Breaking News

Ghuri Market

শৈশব রুদ্ধ মোবাইলে, ভোকাট্টা ঘুড়িবাজার, মাছি তাড়াচ্ছে দোকানগুলো

লাখ টাকার মাল তুলেও বসে আছেন দোকানিরা।

Lose in Kite Market at children are playing with mobile | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 17, 2023 2:23 pm
  • Updated:September 17, 2023 2:23 pm

নব্যেন্দু হাজরা: নীল আকাশে সাদা মেঘ আছে। দখিনা হাওয়াও রয়েছে। কিন্তু ঘুড়ির দেখা নেই। নেই ভো-কাট্টা চিৎকার, নেই এক ল‌্যাম্পপোস্ট থেকে অন‌্য ল‌্যাম্পপোস্ট ঘিরে মাঞ্জা দেওয়ার ব‌্যস্ততা। কোথাও কোথাও দু’একটা ঘুড়ির দেখা মিলছে, তবে তা নেহাতই চোখে না পড়ার মতো। রাত পোহালেই সোমবার বিশ্বকর্মা পুজো। অটো স্ট‌্যান্ড থেকে সাইকেল গ‌্যারেজ সর্বত্র পুজোর তোড়জোড় চললেও মাছি তাড়াচ্ছে ঘুড়ি-সুতোর দোকানগুলো।

রঙিন ঘুড়ি, আর লাটাই ভরা সুতো সাজিয়ে রাখলেও খদ্দেরের দেখা নেই। ‘‘গোটা দিন দোকানে বসেও হাজার টাকার বিক্রি হয়নি। পুরনো অভ্যেস থেকে দোকানে বসা। কিন্তু এখনকার কিশোররা তো মোবাইলেই আটকে। ঘুড়ি ওড়াতেও জানে না। শেখারও চেষ্টা করে না। তাই বিশ্বকর্মা পুজো বলে মনেও হয় না।’’ শনিবার বিকেলে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন বেহালার বিজি প্রেসের কাছে ঘুড়ির ব‌্যবসায়ী বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ‌্যায়।

Advertisement

মূলত উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ, বরেলি, লখনউ থেকে বাংলায় ঘুড়ি, লাটাই, সুতো আসে। এবারও এসেছে। কিন্তু লাখ টাকার মাল তুলেও বসে আছেন দোকানিরা। প্ল‌াস্টিকের ঘুড়ির দাম সবথেকে কম। পাঁচ থেকে ছ’টাকা। কাগজের মূলত অস্ট্রেলিয়ান পেপারের ঘুড়িরই সামান‌্য চাহিদা রয়েছে। তার দাম সাত থেকে পঁচিশ টাকা পর্যন্ত। কাগজের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুড়ির দামও বেড়েছে কিছুটা। সাইজ অনুযায়ী দাম।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কলেজের মধ্যেই ডাক্তারি পড়ুয়ার শ্লীলতাহানির অভিযোগ, গ্রেপ্তার হাসপাতালেরই টেকনিশিয়ান]

বিধান সরণিতে ঘুড়ির দোকান কিশোর শেঠের। বললেন, ‘‘বেচাকেনা নেই। করোনার টাইমে তবু প্রচুর মানুষ ঘুড়ি ওড়াত। ঘর থেকে বেরোত না। ছাদে উঠে যেত ঘুড়ি-লাটাই হাতে। আবারও ভাটা পড়ে মানুষের শখে। রবিবার যদি কিছুটা বিক্রি হয়। নাহলে পুরো টাকাটাই লোকসান হবে। আমি নিজেও ঘুড়ি ওড়াই। ঘুড়ির নেশাতেই ব‌্যবসা করি।’’ দোকানের সামনে পেটকাটা, চাঁদমার্কা, মুখপোড়া, ময়ূরপঙ্খী, কানকাটিয়ার মতো হরেক ঘুড়ির পশরা। বিভিন্ন রকমের সুতোও। নিউ আলিপুরের সুমন ভৌমিক বলেন, ‘‘আমার ব‌াবার পুরনো ব‌্যবসা। আমি এখন দেখি। ব‌্যবসা মোটামুটি। কিছু বিক্রিবাটা হচ্ছে। আসলে এখনকার ছেলেরা আগের মতো ঘুড়ি ওড়ায় না আর।’’

তবে শুধু কলকাতা নয়, জেলা বা শহরতলির চিত্রও একই। কোথাও নেই সুতোয় মাঞ্জা দেওয়ার হুড়োহুড়ি। কাচ গুঁড়ো করার তাড়া, ঘুড়ির পিছনো কঞ্চি হাতে কিশোরের ছুটে বেড়ানোর দৃশ‌্য। হাওড়ার টিকিয়াপাড়া, বালি, বেলুড়, ঘুসুড়ি ঘুড়ির জন‌্য বিখ‌্যাত ছিল। সেখানকার আকাশে কিছু ঘুড়ির দেখা মিললেও বিশ্বকর্মা পুজো বলে মনে হওয়ার জো নেই। মনোবিদদের কথায়, আসলে শৈশব এখন মুঠোফোনে বন্দি। ঘুড়ি ওড়ানো কী জিনিস তাই জানে না অনেকে। বাবা-কাকাদের ওড়াতেও দেখে না। তাদের শেখানোও হয় না। সবাই পড়াশোনা। আর তার বাইরে মোবাইলে মগ্ন। বিশ্বকর্মা পুজোও তাই ম‌্যাড়মেড়ে। আকাশে দেখা মেলে না ঘুড়ির। শোনা যায় না ভো-কাট্টা চিৎকার। আসলে ঘুড়ি ওড়ানোটাই যেন ভো-কাট্টা হয়ে গিয়েছে শৈশব থেকে।

[আরও পড়ুন: সংসদীয় কমিটিতে ফের ব্রাত্য তৃণমূল! বড় দায়িত্ব পেলেন বিজেপির লকেট]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ