BREAKING NEWS

২২ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  মঙ্গলবার ৬ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতেই পদ্ম ফেরি পার্ক সার্কাসের মোদি ভক্ত ইয়াকুবের

Published by: Sandipta Bhanja |    Posted: May 25, 2019 10:54 am|    Updated: May 25, 2019 10:54 am

Modi bhakt selling masks, saffron scarfs in Park Circus area

গৌতম ব্রহ্ম: “জয় শ্রীরাম… চাবির রিং ১০ টাকা। জয় শ্রীরাম… নমো মুখোশ ৩ টাকা। জয় শ্রীরাম… পদ্ম ব্যাজ ১০ টাকা। জয় শ্রীরাম… সাধারণ ব্যাজ ৫ টাকা। জয় শ্রীরাম… উত্তরীয় ১৫ টাকা। জয় শ্রীরাম… স্পেশ্যাল উত্তরীয় ৬০ টাকা।” মুরলীধর সেন লেনে ঢোকার মুখেই ফুটপাথ জুড়ে দাঁড়িয়ে তিনি। কপালে গেরুয়া ফেট্টি, গলায় পদ্মশোভিত উত্তরীয়। হাতে বিজেপি দলের হরেক উপাচার। গেরুয়া নিশান উড়িয়ে, কখনও ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগানে ক্রেতাদের নজর কাড়ছেন। জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা বিজেপি কর্মীরা উত্তরীয়, মুখোশ, গেরুয়া নিশান, ফেট্টি, চাবির রিং কিনছেন। অনেকে আবার শুধু দরদাম করেই থামছেন, কিনছেন না। প্রতিবারই দাম বলার আগে হাসিমুখে ‘জয় শ্রীরাম’ যোগ করে দিচ্ছেন তিনি।

[আরও পড়ুন: জেলার দুটি আসনেই জিতেছে দল, কিন্তু নিজের ওয়ার্ডেই হারলেন অনুব্রত]

‘তিনি’ মহম্মদ ইয়াকুব। ঠিকানা : ৫১, সামসুল হুদা রোড, পার্ক সার্কাস। মাঝবয়সি এই ‘হকার’ সন্ত কবীরের মতোই নির্ভয়ে ‘রামনাম’ করেন। নিঃসংকোচে ‘ভারত মাতা কী জয়’ বলেন। মোদির নামে স্লোগানও দেন। জানালেন, “আমি ভারতীয়। কবীরের দেশের মানুষ। ‘রামনাম’-এ সমস্যা কোথায়?”  জিনিস কেনার সময় যেমন কেউ হকার বা দোকানদারের নাম জিজ্ঞেস করেন না, ইয়াকুবের ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু কেউ শুধোলে নাম বলতে তাঁর আপত্তি নেই এতটুকু। জানালেন, “অনেক নেতাই ফোন নম্বর নেন। সভা-সমিতি থাকলে পতাকা, মুখোশ, উত্তরীয় বিক্রির জন্য ডেকে পাঠান। তখন নাম বলতে হয়। কখনও কারও চোখে বিদ্বেষ দেখিনি।” অনেকেই অবশ্য ইয়াকুবের রামপ্রীতিতে বাধ্যবাধকতা দেখছেন। ব্যবসার গন্ধ পাচ্ছেন। সন্দেহ নিরসন করলেন ইয়াকুব। জানালেন, “সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস। সব দলের জিনিস বিক্রি করি। তবে শুধু বিজেপির বেলাতেই ‘জয় শ্রীরাম’ বলি। যে পুজোর যে মন্ত্র।” দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পর্কেও ইয়াকুবের ধারণা স্পষ্ট। জানালেন, “মোদিজিকে মুসলিম-বিদ্বেষী মনে করলে আমি এখানে আসতামই না। অন্য ভাবে অর্থ রোজগারের সুযোগও আমার কাছে রয়েছে। বালাকোটের ‘এয়ার স্ট্রাইক’ ভারতীয় হিসেবে আমার মনের জোর বাড়িয়েছে। মন বলছে, দেশ মোদিজির হাতে সুরক্ষিত থাকবে।”

[আরও পড়ুন: ঘরের মেয়ে মিমির জয়, মিষ্টি বিতরণ-পুজোপাঠে ব্যস্ত জলপাইগুড়ির পাণ্ডাপাড়া]

বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকেই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের বিজেপি সদর অফিসে ভিড় বাড়তে শুরু করে। নাখোদা মসজিদের গেটের উলটোদিক থেকে গাড়ির জ্যাম। যানজট সামলাতে পুলিশ নাকানি-চোবানি খাচ্ছে। মেক্সিকান ওয়েভের মতোই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি উঠছে। কেউ নাচছেন, কেউ গেরুয়া নিশান নিয়ে দৌঁড়চ্ছেন। কেউ আবার সুদূর মল্লিকপুর থেকে হুইলচেয়ারে চেপে চলে এসেছেন মুরলীধর সেন লেনের মুখে। দেদার বিক্রি হচ্ছে গেরুয়া নিশান, বিজেপির ব্যাজ, মোদির মুখোশ, চাবির রিং। বিজেপি অফিসের ভিতরেই রয়েছে সুবোধকুমার মণ্ডলের দোকান। তিল ধারণের জায়গা নেই। সেখানেও পতাকা, মুখোশ, চাবির রিং, উত্তরীয় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জীবনী-সহ হরেক বই। সুবোধবাবু জানালেন, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পাঁচশোর বেশি গেরুয়া উত্তরীয় বিক্রি হয়েছে। ব্যাজ বিক্রি হয়েছে হাজার খানেক। মুখোশ তিনশোর মতো। যাদবপুরের বিজেপি নেত্রী শর্বরী মুখোপাধ্যায়, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের অমিত রায় জানালেন, “আমরা তো নিয়মিত এখানে আসি। অনেক নতুন মুখ দেখছি। তবে ইয়াকুব ভাই মন ছুঁয়ে গেল।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে