গৌতম ব্রহ্ম: তাঁর হাত ধরেই রাজ্যে পা রাখে মারণ COVID-19। অবশেষে আশার খবর শোনালেন চিকিৎসকরা। করোনা থেকে মুক্তি পেলেন এ রাজ্যের আমলার ছেলে। প্রথম দফায় তাঁর রিপোর্টে নেগেটিভ এসেছে। রাজ্যের প্রথম আক্রান্তই প্রথম করোনামুক্ত হলেন।
তবে তিনি একা নয়, হাবড়ার আক্রান্ত ছাত্রী এবং লন্ডন ফেরত বালিগঞ্জের আক্রান্ত তরুণের ব্যবসায়ী বাবার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়। তাঁদেরও নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। অর্থাৎ নোভেল করোনা সংক্রমণ মুক্ত তাঁরাও।
লন্ডন থেকে ফেরার দিন কয়েক পরই জানা যায় করোনায় আক্রান্ত নবান্নের আমলার ছেলে। তারপর থেকে বেলেঘাটা আইডিতে ভরতি ওই তরুণ। এদিন হাসপাতালের তরফে জানানো হল, ১৪ দিন ধরে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। আপাতত তিনি সুস্থ। মারণ ভাইরাসের কোপ থেকে বেরিয়ে আসতে সফল হয়েছেন তিনি। প্রথম দফার রিপোর্টে জানা গিয়েছে, তরুণ করোনামুক্ত। রবিবার দ্বিতীয় দফার রিপোর্ট হাতে পাবেন চিকিৎসকরা। সেই রিপোর্টেও নেগেটিভ এলে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এদিকে, নোভেল করোনা ভাইরাস আক্রান্ত বালিগঞ্জের ব্যবসায়ীর লন্ডন ফেরত তরুণের দ্বিতীয় পরীক্ষাও পজেটিভ মিলেছে। অর্থাৎ তিনি এখনও সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছেন। তাঁর মায়ের দ্বিতীয় পরীক্ষাও পজেটিভ এসেছে। আগামিকাল এই দু’জন-সহ আরও ৩ আক্রান্তের ফের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্র-রাজ্যের প্রশংসায় টুইট, রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে লড়াইয়ের আহ্বান রাজ্যপালের]
ওই তরুণ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ইংল্যান্ডে একটি জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই পার্টিতেই বেশ কয়েকজন করোনা সংক্রমিত যুবক-যুবতী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। সেখান থেকেই ওই তরুণের শরীরে ছড়িয়েছে করোনা। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানিংয়ে উপসর্গ ধরা পড়েনি। বিলেত থেকে ফিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা কিংবা কোয়ারেন্টাইনে থাকা, কিছু করেননি তরুণ। বরং ছেলেকে নিয়ে শপিং মলে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন মা। রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে যখন কাজ করেছেন মা, তখনও সঙ্গী ছিলেন ছেলে। এভাবেই কেটে যায় প্রায় দু’দিন। পরে তরুণ করোনা আক্রান্ত জানা গেলে নবান্নজুড়ে আশঙ্কার আবহ তৈরি হয়।দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করায় সমালোচনার মুখে পড়ে গোটা পরিবার। নিজের অধীনে থাকা দপ্তরের আমলার এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণে ক্ষোভ উগরে দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরে ওই তরুণের মা-বাবারও পরীক্ষা করা হয়। যদিও তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এবার রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত সেরে ওঠায় আশার আলো দেখছে রাজ্যবাসী। এভাবেই মারণ ভাইরাসকে হার মানিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সকলে।