ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভময় মণ্ডল: টার্গেট ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের শাসকদলের ভোট বৈতরণী পার করাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন রাজনৈতিক কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। ইতিমধ্যেই সাংগঠনিক স্তরে পিকের পরামর্শেই দলের খোলনলচে পালটাতে শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি তারই প্রতিফলন। এবার রাজ্যজুড়ে প্রচার-সমীক্ষার পাশাপাশি তৃণমূলের মিডিয়া সেলের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিলেন প্রশান্ত কিশোর। জানা গিয়েছে, আরও বেশি করে যুব সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করতে তৃণমূলের মিডিয়া সেলের দায়িত্ব বকলমে সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন পিকে। তাঁর সংস্থাই এখন থেকে মিডিয়া সেল চালাবে বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: হাসি কেন উবে গেল জঙ্গলমহলের? কারণ খুঁজছেন প্রশান্ত কিশোর]
শুরু থেকেই দলের মিডিয়া সেলের রাশ ছিল তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের হাতে। তারপর দলে যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব বাড়ায় মিডিয়া সেলের দায়িত্ব তাঁর উপর বর্তায়। তখন কারগিল যোদ্ধা কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরিই ছিলেন মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর ধীরে ধীরে দলের অভ্যন্তরে খোলনলচে বদলাতে শুরু করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক পরিকল্পনাবিদ প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শেই একাধিক কর্মসূচির সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি তারই অঙ্গ। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্য তথা গোটা দেশে ভোটবাক্সে ফায়দা তুলেছে গেরুয়া শিবির, যা মূলতই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের উপর ভর করে। ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া বড় হাতিয়ার, যা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বিজেপি। তাদের আইটি সেল এতটাই শক্তিশালী যে তাদের সমকক্ষ হয়ে লড়াই করতে হলে দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাই তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া সেল এবার বকলমে চালাবে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই প্যাক।
তবে এই সেল যেমন চালাবেন প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কর্মীরা, তেমনই দলের যুব নেতা-কর্মীদের আরও বেশি করে এই কর্মসূচিতে টানা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, জেলায় জেলায় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সরকারি প্রকল্প, দলের কথা প্রচারের দায়িত্ব সিংহভাগ থাকবে তাঁদেরই কাঁধে। মানে, প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক এবং দলের যুব সংগঠনের শ্রম, এই দুইয়ের সংমিশ্রণে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া সেল কাজ করবে আগামিদিনে। কারণ, দলের কোথায় কী খামতি তা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল যুব সম্প্রদায়ও। তাই তাঁদের আরও বেশি করে এই কাজে নিয়োগ করা হবে বলে সূত্রের খবর। তবে বেছে বেছে দলের যুব সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের এই কাজে নিয়োগ করা হবে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, মেধাবী এবং পরিশ্রমীরাই অগ্রাধিকার পাবেন।