অর্ণব আইচ: আপনার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটা একটু দেবেন? পুলিশ অফিসারের মুখে এই কথাটা শুনে প্রথমে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার (kolkata) চক্রবেড়িয়া রোডের এক বাসিন্দা। হঠাৎ পুলিশ ফোন নম্বর চাইছে কেন? বিষয়টি বুঝতে পেরে হেসে পুলিশ অফিসার জানান, নতুন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হচ্ছে। কনটেনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদের কোনও জিনিস প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তা জানাবেন। সেই মতোই প্রয়োজনীয় সামগ্রী নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দেবে পুলিশ কর্মীরা। লকডাউনে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে পুলিশের এই উদ্যোগে খুশি প্রত্যেকেই।
উত্তর থেকে দক্ষিণ। কলকাতার কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই রাস্তায় নেমে পড়েছে পুলিশ। কোনও এলাকায় তৈরি হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। আবার কোথাও প্রত্যেক পরিবারের একজনের ফোন নম্বর নিয়ে রাখছেন সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিকরা। পুলিশ অফিসারদের ফোন নম্বর দেওয়া হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। বুধবারই পুলিশ কমিশনার প্রত্যেক পদমর্যাদার অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, লকডাউনে কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যাতে সমস্যায় না পড়েন। সেই নির্দেশ মেনে যে প্রবীণ নাগরিকরা কলকাতা পুলিশের প্রকল্প ‘প্রণাম’-এর সদস্য, তাঁদের খবরাখবর নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন পুলিশ অফিসাররা। যাঁরা সদস্য নন, তাঁরাও যাতে অসুবিধায় না পড়েন, সেদিকেও রয়েছে পুলিশের নজর। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শহরের কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে লকডাউন শুরু হতেই মাইক নিয়ে প্রচার করছে পুলিশ। ব্যারিকেড ভেঙে কেউ যাতে বের হওয়ার চেষ্টা না করেন, সে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন করা হচ্ছে প্রত্যেককে।
[আরও পড়ুন: কাজের মারাত্মক চাপেই আত্মঘাতী? রেললাইনে রেলকর্মীর দেহ উদ্ধার ঘিরে চরমে রহস্য]
লকডাউন শুরুর আগেই ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ও ডিসি পদমর্যাদার অফিসাররা। যাতে বাসিন্দারা অসুবিধা না পড়েন, সেদিকেও নজর আছে পুলিশের। জানা গিয়েছে, সতর্কতা মেনে পুরসভার সবজির গাড়ি এলাকায় পৌঁছে যাবে। বাসিন্দারা মাস্ক পরে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতেও পারবেন। প্রসঙ্গত, উল্টোডাঙা থানার এলাকায় আরিফ লেন, অধর দাস লেন, আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি নিয়ে তৈরি হয়েছে কনটেনমেন্ট জোন। ওই এলাকার বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে পুলিশের বিশেষ ফোন নম্বর। বলা হয়েছে, দিনে বা রাতে যে কোন সময় বাসিন্দারা যোগাযোগ করতে পারেন। বাসিন্দাদের বাজার বা খাবারের ক্ষেত্রে যাতে অসুবিধা না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়াও কনটেনমেন্ট জোনে কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেদিকে নজরদারির জন্য পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোরও ব্যবস্থা হচ্ছে।