BREAKING NEWS

২১ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  সোমবার ৫ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির রক্তরসে অসুস্থের চিকিৎসা, করোনা যুদ্ধে এটাই ভরসা বিজ্ঞানীদের

Published by: Sucheta Sengupta |    Posted: March 29, 2020 3:35 pm|    Updated: March 29, 2020 3:35 pm

A group of doctors is willing to apply old plasma transfusion to treat Corona patients

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারণ নোভেল করোনা ভাইরাসকে বাগে আনতে হিমশিম দশা গোটা বিশ্বের। কিন্তু অতি সহজেই চিরাচরিত উপায়ে তাকে মানবশরীর থেকে নির্মূল করা সম্ভব। অন্তত কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এই উপায়ই প্রয়োগের পথে হাঁটতে চান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। পদ্ধতির নাম প্লাজমা ট্রান্সফিউশন (Plasma Transfusion)। যা প্রয়োগ করে এর আগে অনেক মহামারির মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের খুব সামান্য অংশের উপর সেই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সাফল্য মিলেছে বলে মার্কিন চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। আপাতত করোনা যুদ্ধে আয়ুধ এই প্লাজমা ট্রান্সফিউশন (Plasma Transfusion) পদ্ধতিই।

কীভাবে COVID-19 পজিটিভ রোগীদের সুস্থ করে তুলবে প্লাজমা ট্রান্সফিউশন? পদ্ধতি বহু প্রাচীন। ১৮২০ সালে স্প্যনিশ ফ্লু যখন মহামারির আকার নিয়েছিল, তখনও প্রাথমিকভাবে এই পদ্ধতিকে হাতিয়ার করেই চিকিৎসা শুরু করা হয়। মারণ রোগের কবল থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কোনও ব্যক্তির দেহ থেকে রক্ত নিয়ে তার প্লাজমা অংশটি আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রবেশ করানো। কী এই প্লাজমা? রক্তের দুটি অংশ – প্লাজমা এবং সিরাম। দুটিতেই রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি থাকে। তবে প্লাজমায় কিছু প্রোটিন থাকে, যা সিরামে থাকে না। তাই সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির প্লাজমাই নেওয়া হয় অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসায়।

[আরও পড়ুন: এখনও আংটি পরছেন? জানেন কী গয়নাগাটি থেকেও ছড়াতে পারে মারণ করোনা]

জেফরি পি হেন্ডারসন, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের মেডিসিন অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের এমডি’র কথায়, ” যে কোনও ভাইরাল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে চিকিৎসা করা হয়েছে। যেমন, হাম, পোলিও, ইনফ্লুয়েঞ্জা। টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কারের আগেও প্লাজমা ট্রান্সফিউশন প্রয়োগ করেছেন আমাদের পূর্বসূরীরা। পরবর্তী সময়ে প্রতিষেধক এসে যাওয়ায় মানুষ আর এর দিকে ফিরে তাকাননি। অনেকেই ভুলে গিয়েছে প্রাচীন পদ্ধতিটির কথা।” একই বিভাগের আরেক চিকিৎসা বিজ্ঞানী ব্রেন্ডা গ্রসম্যান বলছেন, ” সুস্থ রোগীর দেহ থেকে বেশ অনেকটা পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ করতে হবে। তারপর তার দুটো অংশকে পৃথক করে নিতে হবে। প্লাজমা অংশটি অসুস্থ রোগীর দেহ প্রয়োগ করার পর কয়েকদিনে ফল মিলবে। পদ্ধতি সহজ, কিন্তু প্রয়োগের ক্ষেত্রটা একটু কঠিন। কারণ, আপনি জানেন না যে কার রক্তে কতটা প্লাজমা থাকবে, সেই পরিমাণ প্লাজমা অসুস্থ ব্যক্তির জন্য যথাযথ কি না। এই পরিমাণের ব্যাপারটা এখনও পরীক্ষামূলকভাবেই ঠিক করতে হয়। ”

[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে দিশা দেখাতে পারে ৭০টি চেনা ওষুধ, আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা]

বিজ্ঞানীরা এও দেখেছেন যে একজন সুস্থ মানুষের প্লাজমা দিয়ে কোথাও ৩ জন সুস্থ হয়েছেন, তো কোথাও এই সংখ্যাটা ১০। চিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত গুটিকয়েক রোগীর উপরে প্লাজমা ট্রান্সফিউশন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে দাবি চিকিৎসকদের। এমনিতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাঁদের কম, তাঁদের উপরেই COVID-19এর হামলা বেশি। তাই প্লাজমা ট্রান্সফিউশনের মাধ্যমে তাঁদের দেহে অ্যান্টিবডি প্রবেশ করিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার পদ্ধতিটি এই মুহূর্তে বেশ কার্যকরী বলেই মনে করছেন মূলত মার্কিন গবেষকরা। সে দেশে মৃত্যুমিছিল আটকাতে এটাই আপাতত অস্ত্র।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে