Advertisement
Advertisement

Breaking News

Maldah

কেন বাবা-মা-বোন-ঠাকুরমাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করল আসিফ? কী ব্যাখ্যা মনোবিদের?

জেরায় পুলিশকে বারবার বিভ্রান্ত করছে কালিয়াচকের খুনি।

Maldah Murder case: Expert explains the reason behind this kind of offence of a person | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:June 20, 2021 10:09 am
  • Updated:June 20, 2021 10:09 am

ডা. হিরণ্ময় সাহা (মনোবিদ, চিকিৎসক): স্বাভাবিক মস্তিষ্কে ভাবতেই কেমন লাগে। একটি উনিশ বছরের ছেলে নিজের বাবা, মা, বোন এবং ঠাকুরমাকে খুন করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে রেখেছে! তারপর সেই বাড়িতেই নির্লিপ্তভাবে বসবাস করছে। মনের জটিল অসুখ ছাড়া এমন কাণ্ড ঘটানো অসম্ভব।

ঘটনা শুনেই আন্দাজ করতে পারছি, ঠান্ডা মাথায় স্বাভাবিক জীবনযাপন চালিয়ে যাওয়া মালদহের (Maldah) কালিয়াচকের ওই যুবকের মধ্যে গভীর অপরাধমনস্কতা রয়েছে। স্কিৎজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) অসুখেরই একটা ধরন এটা। এই ছেলেটি নিজের আশপাশে একটা কাল্পনিক জগৎ তৈরি করেছে। ভেবেছে, আমার মা-বাবার অঢেল টাকা আছে। তারা তা আমাকে দেবে না। সে কারণে ওরা আমার শত্রু। আজ রাতেই সবাইকে খতম করে দিই। এই চিন্তা থেকেই তার মধ্যে অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার জন্ম নিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই মানসিক বিকারের ফলে এ ধরনের অবস্থা তৈরি হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনার মাঝে নয়া উদ্বেগ গ্রিন ফাঙ্গাস, জেনে নিন উপসর্গ, কীভাবে রুখবেন ছত্রাকের হানা?]

এই ধরনের রোগীরা ঠান্ডা মাথায় অপরাধের ছক কষতে পারেন এবং অপরাধ করার পরেও আশ্চর্য রকম নিরুত্তাপ থাকেন। পৃথিবীতে এহেন উদাহরণ ভূরি ভূরি। এরা কারও সঙ্গে বড় একটা মেলামেশা করে না। নিজেরা নিজেদের একটি জগৎ তৈরি করে থাকে। ল্যাপটপ, মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এই ছেলেটিও দীর্ঘদিন ঘরবন্দি ছিল।

Advertisement

শুধু ঠান্ডা মাথায় খুনই নয়, কীভাবে ধরা পড়া থেকে বাঁচা যায়, তার নিখুঁত পরিকল্পনাও তৈরি করে রাখে এহেন মানসিক রোগীরা। লক্ষ্য করবেন, মহম্মদ আসিফ ছেলেটি জেরার মুখে পুলিশকে ভ্রান্ত কথাবার্তা বলবে। কোনও কথার সঙ্গে কোনও কথার যোগসূত্র থাকবে না। এদের অপরাধের প্যাটার্নটাই এরকম। আর সকলে যখন ভাবছেন, নিজের হাতে মা-বাবা, বোনকে খুন করেছে। কী করে পারল? আদতে আপনজন, রক্তের সম্পর্ক অথবা ঘনিষ্ঠতা সংক্রান্ত অনুভূতি কাজ করে না এহেন মানসিক রোগীদের। আত্মবিশ্বাস এদের প্রবল। এরা মনে করে, কেউ তাদের ধরতে পারবে না। আজ যদি এ ধরা না পড়ত, আগামী দিনেও একের পর এক অপরাধ করে চলত।

[আরও পড়ুন: তিল-তিসিতেই হবে করোনা বধ! মান্যতা দিল WHO জার্নাল]

তবে রাতারাতি অপরাধী হয়নি আসিফ। খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে ছেলেটি ছোটবেলায় পশুপাখিকে মেরে অম্লানবদনে মিথ্যে কথা বলত। কোনও অনুশোচনা ছিল না। সে সময় কাউন্সেলিং করলে এমন ঘটনা ঠেকানো যেত। স্কিৎজোফ্রেনিয়া রোগটি মূলত মনে চিন্তাভাবনার রোগ। এটি একটি জার্মান শব্দ। স্কিৎজ শব্দের অর্থ হল ভাগ হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ চিন্তার জায়গাটা যখন ভাগ হয়ে যায়, মানুষ যেটা দেখছে, সেটার সঙ্গে কো-রিলেট করতে পারছে না, তখনই সমস্যার শুরু। তার কারণেই এই ঘটনা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ