Advertisement
Advertisement
Aindrila Sharma

তিন মাস পরেই ছিল ২৫তম জন্মদিন, বাবা-মা-দিদিকে নিঃস্ব করে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা

ঘরের মেয়েকে হারিয়ে শোকাহত মুর্শিদাবাদ।

আর তিন মাস পরে ফেব্রুয়ারিতে ২৫তম জন্মদিন সেলিব্রেট করার কথা ছিল ঐন্দ্রিলার। কিন্তু সে ইচ্ছে আর পূরণ হল কই! সব প্রার্থনাকে ব্যর্থ করে অনুরাগীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে তাঁর জীবনের অদম্য লড়াই।

১৯৯৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঘর আলো করে শর্মা পরিবারে জন্ম নেন ঐন্দ্রিলা। বাবা উত্তম শর্মা মুর্শিদাবাদের হাসপাতালের চিকিৎসক। মা শিখা শর্মা এক নার্সিং হস্টেলের ইন-চার্জ। স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি আঁকা, নাচের মতো বিভিন্ন বিষয়েই আগ্রহ ছিল ঐন্দ্রিলার। কলকাতার এক বেসরকারি কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভরতি হয়েছিলেন। যদিও অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা শেষ করা হয়নি।

ছোট থেকেই অভিনয়ের স্বপ্ন দেখতেন। বড় অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছাই ছিল। ২০১৭ সালে ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের হাত ধরে টেলিভিশনের পর্দায় হাতেখড়ি হয় তাঁর। তার পর ‘জিয়নকাঠি’ সিরিয়ালেও দেখা যায় তাঁকে। ‘ভাগাড়’ ওয়েব সিরিজেও অভিনয় করেন। গোয়ায় আরও একটি সিরিজের শুটিং করার কথা ছিল। কিন্তু বাদ সাধে অসুস্থতা।

২০১৫ সালে অস্থিমজ্জার ক্যানসারে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা শর্মা। টানা লড়াইয়ের পর অনেকটা সুস্থও হয়ে ওঠেন তিনি। তারপরই শুরু করেছিলেন কাজ। কিন্তু ২০২১ সালে ফের ক্যানসার ধরা পড়ে।

২০২১ ডিসেম্বরে ঐন্দ্রিলা জানান তিনি ক্যানসারমুক্ত। কিন্তু খারাপ সময় যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না তাঁর। চলতি বছর পয়লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা। হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে।

ঐন্দ্রিলার ব্রেনের বাঁ দিকে হেমারেজ ছিল। অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর থেকে ভেন্টিলেশনেই ছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল। তবে অস্ত্রোপচারের ১০ দিনের মাথায় ফের স্ট্রোক হয়। দ্বিতীয়বারের স্ট্রোকে ঐন্দ্রিলার ডান দিনের ব্রেনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এরই মধ্যে আবার অভিনেত্রীর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে। কিন্তু তারপরেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে শনিবার অন্তত ১০বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। আর রবিবার বেলা ১২.৫৯ মিনিটে সব শেষ। মা-বাবা, দিদিকে নিঃস্ব করে চলে গেলেন তিনি। একেবারে একা হয়ে গেলেন বন্ধু অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী।

মুর্শিদাবাদের ঘরের মেয়ে, সকলের প্রিয় ঐন্দ্রিলার যে তাড়াতাড়ি সবাইকে ছেড়ে চলে যাবেন, ভাবেননি কেউ। প্রার্থনা ছিল, যেন মিরাকল ঘটে। কিন্তু হল না। শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব। বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছে ২৪ বছরের প্রাণোবন্ত তরুণীর হাসি মুখটা।