পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন বেহালা দেবদারু ফটকের পুজো প্রস্তুতি৷
রোহন দে: ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়।’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য যেভাবে দেখেছিলেন আজও ঠিক একইভাবে বহু মানুষ রাতে খিদের জ্বালা নিয়েই ঘুমোতে যায়। তাকিয়ে থাকে শহরের বড় অট্টালিকাগুলির দিকে। যদি সেখান থেকে কখনও কৃপার কণা এসে পড়ে তাদের থালাতে। আর এই ভাবনা থেকেই এবার সেজে উঠছে বেহালা দেবদারু ফটকের মণ্ডপ। থিমমেকার অভিজিৎ ঘটকের ভাবনায় ৪৬তম বর্ষে তাদের নিবেদন- ‘হে মহাজীবন’।
[পুজোয় মাটিতেই ‘বিলীন’-এর সৃষ্টি দেখাবে চোরবাগান সর্বজনীন]
সমাজের এক প্রান্তে পড়ে থাকা যে মানুষগুলো পেট ভোরে খেতে পর্যন্ত পায় না, তাদের যন্ত্রণার কথা এবার পুজোয় তুলে ধরছেন শিল্পী অভিজিৎ ঘটক। মণ্ডপের মধ্যে ক্ষুধার্ত মানুষের আবক্ষ মূর্তি থেকে মণ্ডপের মাঝখানে বিরাজ করবে একটি বড় বার্গার। জলেই জল বাঁধার মতো অবস্থা। যেখানে বার্গার বরাদ্দ সমাজের উচ্চবিত্তের জন্য। আর গরিবরা থেকে যায় অভুক্তই। দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষগুলির অত্যাচারিত হওয়ার প্রতিচ্ছবিও ফুটে উঠবে গোটা মণ্ডপে। পুরনো থালা-বাটি থেকে প্রচুর রুটি, সবেরই মিশেলে তৈরি শিল্পকর্মে সেজে উঠছে মণ্ডপ। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই অভিজিৎ ঘটকের হাতের ছোঁয়ায় গড়ে উঠছে মাতৃপ্রতিমা। মা এখানে থাকছেন অন্নদায়িনী রূপে। নিপীড়িত মানুষগুলির মুখে একটুকরো অন্ন তুলে দিতে পারেন একমাত্র স্বয়ং মা দুর্গাই। পুজোর আকর্ষণ হিসেবে থাকছে অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীর কণ্ঠে ভাষ্যপাঠ। যা আবহ হিসেবে শোনা যাবে মণ্ডপে। মণ্ডপের আরেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আলো। আলোকসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন দীনেশ পোদ্দার। আলো-আঁধারির মায়াবী খেলাতেই জীবন্ত হয়ে উঠবে মণ্ডপ। আলোর রকমারি ব্যবহারেই ‘হে মহাজীবন’-এর অন্দরে পৌঁছে যাবেন দর্শনার্থীরা।
[পুজোয় ‘অন্তহীন প্রাণের’ কাহিনি বলবে উল্টোডাঙা পল্লিশ্রী]
উদ্যোক্তাদের আশা, দর্শনার্থীদের সামনে এবার তাঁরা অভিনব এক ভাবনা তুলে ধরছেন। এক নিদারুণ বাস্তব ছবিই ফুটে উঠবে গোটা মণ্ডপ জুড়ে। এই মণ্ডপ দর্শনার্থীদের মনে গেঁথে যাবে।