Advertisement
Advertisement

Breaking News

Sound

ডিজে ঠেকাতে সাউন্ড লিমিটার চান পরিবেশবিদরা, পিকনিকের মরশুমে আগাম সতর্কতার দাবি

কানের কাছে ৮৫ ডেসিবেলে শব্দ হলে এক জন মানুষ কিছুক্ষণের জন্য বধির হয়ে যেতে পারেন।

Climate activists demand cap on DJ and loud music systems | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:November 22, 2022 10:57 am
  • Updated:November 22, 2022 10:57 am

অভিরূপ দাস: ঘাতক ডিজে! ……….সতর্কতা, নিষেধাজ্ঞা জারি করেও সেই ডিজেতে কতটা লাগাম টানা যাবে পিকনিকের মরশুমে। লাখ টাকার প্রশ্ন পরিবেশবিদদের। দশমীর রাতে মাল নদীতে হড়পা বান কেড়ে নিয়েছে আট আটটা প্রাণ। বান আসার সময় সাবধান করেছিলেন অনেকেই। অভিযোগ, বিসর্জনের ডিজে-র কানফাটা আওয়াজে সাবধানবাণী কানে পৌঁছয়নি কারও। তারও আগে জলপাইগুড়িতে জল্পেশের মন্দিরের পথে ডিজে থেকে বিদু‌্যৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান ১১জন। পিকনিকের মরশুমে ডিজের তুমুল আওয়াজই এখন চিন্তার বিষয় প্রশাসনের কর্তা থেকে পরিবেশবিদদের। মায়াপুর, গাদিয়াড়া, দুর্গাপুর ব‌্যারেজ, বাকসি, মহিষাদলের গেঁওখালি, রায়চক বা নুরপুর অথবা সুন্দরবনে ভিড়ে ঠাসা পিকনিক টিমের ডিজে হুল্লোড় সামলানোর পরিকাঠামোই বা কতটা আছে স্থানীয়ভাবে, প্রশ্ন সেটাও।

ডিজের ভয়ঙ্কর শব্দব্রহ্ম থামাতে আপাতত পরিবেশবিদদের হাতিয়ার ২০২০ সালের রাজ‌্য পরিবেশ দফতরের নির্দেশিকা। যেখানে বলা হয়েছে লাউড স্পিকারে বসাতে হবে সাউন্ড লিমিটার। পরিবেশবিদ নব দত্তর কথায়, প্রশাসনকে নজরে রাখতে হবে। কোনও ভাবেই সাউন্ড লিমিটার ছাড়া বক্স বাজানো যাবে না। সাধারণত ৬৫ ডেসিবেলের বেশি আওয়াজ হলেই তা ঠেকিয়ে দেয় সাউন্ড লিমিটার। সেখানে ডিজের আওয়াজ নূ‌ন্যতম দেড়শো ডেসিবেল। পরিবেশবিদরা বলছেন, ২০০০ সালের নয়েজ অ‌্যাক্ট অনুযায়ী এতটা আওয়াজ করা যাবে না, যা সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশ নষ্ট করে। সেই আওয়াজের মাপকাঠি ঠিক করবে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মৎস্যজীবীদের জালে আটকে মৃত্যু একের পর এক গাঙ্গেয় ডলফিনের, বাঁচাতে বিশেষ উদ্যোগ বর্ধমানে]

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’-র হিসাব অনুযায়ী, টানা কয়েক ঘণ্টা কানের কাছে ৮৫ ডেসিবেলে শব্দ হলে এক জন মানুষ কিছুক্ষণের জন্য বধির হয়ে যেতে পারেন। আর মাত্র ষাট মিনিট কানের কাছে একশো ডেসিবেল শব্দ সম্পূর্ণভাবে বধির করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। পরিবেশবিদ নব দত্ত জানিয়েছেন, ডিজের আওয়াজ প্রায় দেড়শো ডেসিবেলের সমান। ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নতুন নির্দেশিকা দিয়েছিল রাজ‌্য পরিবেশ দফতর। সাউন্ড লিমিটার বসানোর নির্দেশিকায় বলা ছিল, যাঁরা তা বসাবেন না, তাঁদের গান বাজানোর বক্স বাজেয়াপ্ত করবে পুলিশ। পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো দিয়ে শুরু। এরপর লক্ষ্মী, জগদ্ধাত্রী, কালীপুজো হয়ে একের পর এক পিকনিক। এমন মরশুমে কলকাতা এবং আশপাশের জেলায় সাউন্ড বক্সের রমরমা বেশি। পিকনিকের মরশুমে তাই কানের সমস‌্যা গা সওয়া।

Advertisement

কলকাতা মেডিক‌্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার, এসএসকেএম, ন‌্যাশনাল মেডিক‌্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগে উপচে পড়ে ভিড়। নীলরতন সরকার মেডিক‌্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের অ‌্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. প্রণবাশিস বন্দ্য়োপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, রাস্তাঘাটে শব্দের বাঞ্ছনীয় মাত্রা সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবেল। কান এর বেশি আওয়াজ সহ‌্য করতে পারে না। অন্তঃকর্ণের মধ্যে কিছু হেয়ার সেল থাকে।

সাউন্ড এনার্জিকে ইলেকট্রিক এনার্জিতে কনভার্ট করে কানের ভিতরের সূক্ষ্ম কোষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডিজে-র আওয়াজে এই হেয়ার সেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারও হয়তো ষাট বছর বয়সে শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডিজের টানা অত‌্যাচারে পঁয়তাল্লিশেই কমে যেতে পারে শ্রবণ ক্ষমতা। তাই পরিবেশবিদ থেকে চিকিৎসক, সকলের আবেদন, নিষেধাজ্ঞা জারিতে হবে না, কঠোর হোক প্রশাসন।

[আরও পড়ুন: ৫০ বছর পরে ফের চাঁদে পাড়ি নাসার রকেটের, শীঘ্রই চন্দ্রপৃষ্ঠে পা রাখবে মানুষ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ