সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব উষ্ণায়নের অন্যতম অভিশাপ জলসংকট। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের সীমিত জলের ভাণ্ডার নিঃশেষিত হওয়ার পথে। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা তো বটেই, বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছে রাষ্ট্রসংঘও। অযথা জল অপচয় রুখে তা সংরক্ষণের পথে না এগোলে সমূহ বিপদ বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। আর ঠিক এই উদ্বেগের জায়গাতেই বোধহয় একেবারে দেবদূতের মতো আবিষ্কৃত হয়েছে ‘মেঘদূত’ নামের একটি প্রযুক্তি। যা প্রয়োগ করে সরাসরি বায়ু থেকে জল তৈরি করা যাবে। দামেও যা সস্তা।
‘মেঘদূত’ প্রযুক্তির আবিষ্কর্তা সৌদি আরবের কিং আবদুল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ। লবণ অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইডের সাহায্যে বাতাস থেকে জল তৈরি করা যাবে, এমন প্রযুক্তিতে কাজ করার জন্য একটি ডিভাইস তৈরি করে ফেলেছেন তাঁরা। এই পদ্ধতিতে কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। তাঁদের কথায়, ”নতুন করে তৈরি জলে লবণের ভাগ ছিল। কিন্তু তা সরাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে আমাদের। তারপর সেটি স্বচ্ছ জলে পরিণত হয়েছে।”
[ আরও পড়ুন: রাজস্থানে তুষারপাত, বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল মরুরাজ্য]
কীভাবে কাজ করেছে ‘মেঘদূত’ প্রযুক্তি? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জল থেকে লবণ সরাতে তাঁরা হাইড্রোজেল ব্যবহার করেছেন। যা ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডকে কঠিন অবস্থায় রাখে। এছাড়া ব্যাবহার করা হয়েছে ছোট একটি কার্বন টিউব। যা নাকি ৩৫ গ্রামের একটি যন্ত্রে একরাতে প্রায় সম পরিমাণ জল বাতাস থেকে সংগ্রহ করেছে। আবার সূর্যের তাপে তা বাষ্পীভূতও হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ বায়ু থেকে জল সংগ্রহের বিপরীত প্রক্রিয়া তথা জল ফের বাষ্পীভূত হয়ে যাওয়া – দুটিই সম্ভব এই পদ্ধতিতে।
এবার আসা যাক, ভারতে এর প্রয়োগ কীভাবে হচ্ছে। জানা গিয়েছে, সৌদি আরবের এই প্রযুক্তি বুঝে নিয়ে মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পে এদেশে ‘মেঘদূত’ তৈরি করেছে মৈত্রী অ্যাপটেক নামে একটি সংস্থা। আপাতত সেকেন্দ্রাবাদ রেল স্টেশনে তা বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার বোতলের দাম পড়ছে মাত্র ৮ টাকা। আবার আপনি নিজের বোতলে সেই জল ভরতে চাইলে, মাত্র ৫ টাকা খরচ করলেই হবে। সাধারণভাবে বাইরে থেকে এক লিটারের জলের বোতলের দাম পড়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা। তবে এটি এখনও বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর করা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা হয়নি। তা হলে হয়ত দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে জলসমস্যার অনেক সহজ সমাধান পাওয়া যাবে।