সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন ভারতের সঙ্গে আর কোনও বিবাদ চায় না। সোমবারের ‘রক্তক্ষয়ী’ সংঘর্ষের পর সুর নরম করল বেজিং। চিনের (China) দাবি, ভারতীয় সেনারা অন্যায়ভাবে চিনের সীমানায় প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল বলেই সোমবার রাতে দুই দেশের সংঘর্ষ হয়েছে। নাহলে, বেজিং এখনও ভারতের সঙ্গে আলোচনারই পক্ষে।
সাড়ে চার দশক পর সোমবার রাতে ফের চিন সীমান্তে রক্ত ঝরেছে ভারতীয় জওয়ানদের। শহিদ হয়েছেন ২০ জন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন সেনা জওয়ান। এই সংঘর্ষে সীমান্তের ওপারেও বহু প্রাণহানি হয়েছে। সরকারিভাবে চিন এখনও নিজেদের দেশের মৃত বা আহতের সংখ্যা ঘোষণা করেনি। তবে হতাহত যে হয়েছে তা মেনে নিয়েছে বেজিং। বুধবার চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, ভারতীয় সেনা জোর করে চিন সীমান্তে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে দু’দেশের সেনার মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এবং এতে প্রাণহানিও হয়েছে। যদিও কতজন চিনা সেনা প্রাণ হারিয়েছেন, তা বুধবারও স্পষ্ট করেনি চিনের বিদেশমন্ত্রক। তবে ভারতীয় সেনা সুত্রে খবর, সীমান্তের ওপারে চিনাদের যে কয়েকজন সেনাকে স্ট্রেচারে করে বা অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিরাপদ স্থানে সরাতে দেখা গিয়েছে, তার ভিত্তিতে বলা যায় ৪০ জনের বেশিই হতাহত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সংঘর্ষের ফলে বেশ চাপে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি।
[আরও পড়ুন: লাদাখ ইস্যুতে এবার আলোচনা বিরোধীদের সঙ্গেও, ১৯ জুন সর্বদল বৈঠক ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী]
চিন সোমবারের সংঘর্ষের জন্য পুরোপুরি ভারতকেই দায়ী করেছে। চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান (Zhao Lijian) বলছেন, “ভারতীয় সেনাই বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে গিয়ে চিনা সেনার উপর আক্রমণ শানিয়েছে। এর ফলে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে, যাতে এত প্রাণহানি হল। চিন ভারতের কাছে আরজি জানাচ্ছে, ভারতীয় সেনা যেন আর সীমান্ত পেরনোর চেষ্টা না করে। কোনও প্ররোচনামূলক বা উসকানিমুলক কাজ না করে। ভারত যেন একপাক্ষিকভাবে এমন কোনও পদক্ষেপ না করে, যাতে সীমান্তের পরিস্তিতি আরও খারাপ হয়।” তবে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে আর কোনও সংঘর্ষ চাই না। আমরা আলোচনা এবং কথোপকথনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায়।”
আসলে, সোমবারের সংঘর্ষের পর বুধবারই চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই’কে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, গালওয়ানে যেটা হয়েছে সেটা পুরোপুরি চিনের পরিকল্পিত হামলা। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। তারপরই দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী ফের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সিদ্ধান্ত নেন।