সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় রাষ্ট্রসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে শুনানি। গতকাল নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে পৌঁছান আং সান সু কি। এই মামলায় নাইপিদাওয়ের আইনজীবীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মায়ানমারের প্রশাসক সু কি। মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রসংঘের আদালত চত্বরে তাঁকে চিরপরিচিত পোশাকে দেখা গেল। মায়ানমারের প্রথাগত পোশাক সঙ্গে খোঁপায় সাদা ফুল। বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলে সোজা দপ্তরে ঢুকে যান তিনি।
কয়েকদিন আগেই সংখ্যালঘুদের গণহত্যার অভিযোগ এন আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে (ICJ) মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় দয়ের করে গাম্বিয়া। জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় ICJ-তে ৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল ওই দেশ। সেখানে মায়ানমারের রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে রাখাইন প্রদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে খুন, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে। সেই মামলা লড়ার জন্য প্রশাসক আং সান সু কি’র নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়।
মুসলিম দেশের সংগঠন ওআইসি’র সমর্থনে গাম্বিয়ার করা মামলার প্রেক্ষিতে প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের বহাল করা হয়েছে। আইনজীবীদের দলের নেতৃত্ব দেবেন স্টেট কাউন্সিলর ও বিদেশমন্ত্রী সু কি। দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে লড়বেন তিনি। সূত্রের খবর, মায়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করার এক মাসের মধ্যে ICJ শুনানি শুরু করতে চলেছে। আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ নিয়ে গাম্বিয়া ও মায়ানমার দুই দফা শুনানিতে অংশ নেবে। এদিকে, গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার একটি আদালতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগে সু কি, সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মায়ানমার। তারপর ৫৫ হাজার উদ্বাস্তুর তথ্য নাইপিদাওয়ের হাতে তুলে দিয়েছে ঢাকা। তবে নানা আইনি জটিলতায় এখনও দেশে ফিরতে পারেননি শরণার্থীরা। সমস্ত কিছু ঠিক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকেই রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানো যাবে বলে মনে করছে হাসিনা সরকার। প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রায় নুয়ে পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এদিকে, নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে ফের রাখাইন প্রদেশে ফিরতে নারাজ রোহিঙ্গারাও। তাঁদের অভিযোগ, ফিরে গেলে ফের হামলা চালাবে বার্মিজ সেনা। সেক্ষেত্রে শরণার্থী হয়ে থাকলে অন্তত প্রাণে বাঁচতে পারবেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ভেস্তে গেল নাশকতার ছক! নোয়াখালি থেকে ধৃত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৪ জঙ্গি]