সুকুমার সরকার, ঢাকা: নদীয়া সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় জঙ্গি ডেরায় পুলিশের অভিযানে অন্তত দুজন নিহত হয়েছে। এ জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, রবিবার ভোর থেকে এ অভিযানের মধ্যে জঙ্গি বাড়ি থেকে বোমা ছোড়া হলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা-সহ দুই পুলিশকর্মী জখম হন। এরআগে জঙ্গি ডেরার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা শনিবার রাতে উপজেলার বজ্রাপুর গ্রামে একতলা একটি টিনশেড বাড়ি ঘিরে ফেলে। রবিবার ভোরে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা সেখানে অভিযান শুরু করে। গোলাগুলির মধ্যে বাড়ির ভেতর থেকে বোমা ছোড়া হয়। বাড়ির বাইরে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হয়েছে। ভেতরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আরও একজন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই বাড়ির মালিক জহুরুল ইসলাম, তার ছেলে জসীম এবং আলম ও আরিফ নামের আরও দুইজনকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশের এসআই মহসিন আলিকে জখম অবস্থায় যশোরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে ওই বাড়ির আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কাছেই একটি মাঠে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্স এনে রাখা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওই বাড়ির কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলায় সরাফত নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন আরেকটি বাড়ি শনিবার রাত থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি সাইফুল ইসলাম জানান, ওই বাড়িতে বিস্ফোরক রয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। সদর থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, লেবুতলার ওই জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়েই কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিযান শুরু হয়। ওই বাড়ি ঘিরে ফেলার পর তারা মহেশপুরের আস্তানার খবর পান এবং সেখানে অভিযান শুরু হয়। সদর থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, আমরা বাড়িটি ঘিরে রেখেছি। বমেব স্কোয়াড এলে পরে ভেতরে অভিযান চালানো হবে।
এর আগে এপ্রিলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে আবদুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দুদিনের অভিযান শেষে ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই অভিযানের এক সপ্তাহের মাথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আরেক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে সোয়াটের ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ শেষে গত ২৭ এপ্রিল চারজনের দেহ উদ্ধার হয়, যারা নিজেদের ঘটানো বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশের দাবি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.