Advertisement
Advertisement

Breaking News

পাথর খাদান

বনদপ্তরের জমিতেই রমরমিয়ে চলছে অবৈধ পাথর খাদান, দেখুন ভিডিও

প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ না নিলে এফআইআর দায়ের হবে, হুঁশিয়ারি গ্রামবাসীদের৷

Illegal stone mining in Bankura, cops look other way
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 22, 2019 12:32 pm
  • Updated:June 22, 2019 12:32 pm

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: বেআইনি খাদান বন্ধে জেলা প্রশাসন এত কড়া৷ তা সত্ত্বেও বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকে বেআইনিভাবে পাথর খাদান চলছে রমরমিয়ে৷ বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের জমিতে দিনেদুপুরেই চলছে বেআইনি ব্যবসা৷ প্রশাসনের নজরদারির ফাঁক গলে এই সমস্যার সমাধান কবে সম্ভব, বা আদৌও সম্ভব কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত স্থানীয় বাসিন্দারা৷

[আরও পড়ুন: আস্ত মানুষ গিলে খাচ্ছে ভূত! অশরীরী আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন মালদহের বাসিন্দারা]

দেউলি গ্রামের জেএল নম্বর ৪২ এর ৪৮১ দাগ নম্বরের জমিতে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ডিনামাইট ফাটিয়ে পাথর তুলে চোরাই কারবার চলছে৷ শাসকদল আশ্রিত মাফিয়ারাই এর মূল হোতা বলে অভিযোগ উঠেছে বরাবর৷ স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, এই অবৈধ পাথর কারবারের সঙ্গে বেশ কয়েকজন আমলাও যুক্ত, মোটা অঙ্কের মাসোহারাও পান তাঁরা। এই অবৈধ খাদানের জেরে বনদপ্তরের কৃত্রিম বাগান নষ্ট হচ্ছে। শুক্রবার স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশ এই অবৈধ কারবার বন্ধ করার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন। প্রয়োজনে তাঁরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে পারেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় ব্লক প্রশাসনকে।

Advertisement

গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকের এই দেউলি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বেআইনি ওই খাদান। সব জেনেও মুখ খুলতে চাননি সরকারি আধিকারিকদের কেউই৷ শুক্রবার স্থানীয় গ্রামবাসীরা যখন জেলার প্রশাসনিক প্রধান এবং বিডিওকে এই বেআইনি পাথর খাদান নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছিলেন, সেইসময়েও খাদান চলছে বহাল তবিয়তেই৷ এই অভিযোগ শুনে বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) সব্যসাচী সরকারের বক্তব্য, ‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। বনদপ্তরকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে।’  জেলার ওন্দা, রানিবাঁধ, শালতোড়া-সহ একাধিক এলাকায় এই বেআইনি পাথর খাদান নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল বনদপ্তরকে৷ তারপরেও কেন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি? এই প্রশ্ন করা হলে কোনও উত্তর দেননি। স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ,  প্রশাসনের কর্তাদের খুব ভাল করেই জানা যে ওই খাদানগুলি বেআইনি। কোনও সরকারি অনুমোদন নেই। নেই পরিবেশ দূষণের ছাড়পত্রও। তারপরেও কোনও অজ্ঞাত কারণে এই খাদান চলছে৷

Advertisement

[আরও পড়ুন:জনসংযোগে নেমে কুলটিতে আমজনতার ধমক খেলেন তৃণমূলের যুব নেতা]

দেউলি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা ওই খাদানে মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ। তাঁরা বলছেন, প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০টা ডিনামাইট ফাটিয়ে পাথর তোলা হচ্ছে। কালো রঙের এই পাথরটিকে স্থানীয় ভাষায় ‘চিলি’ বলা হয়। গোটা এলাকা জুড়ে পাথরের গুঁড়ো কুয়াশার মতো আস্তরন তৈরি করে রেখেছে। এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় এক যুবকের কথায়, ‘প্রতিদিন ট্রাক্টর, ডাম্পার মিলে ১০০ থেকে ১৫০ গাড়িতে করে পাথর নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন জেলায়। পাথর ভাঙার মেশিন অর্থাৎ ক্রাশারে যাওয়ার আগে এই পাথর ৩০০ সিএফটি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়।’

বর্ষাকাল ছাড়া সারা বছরই বেআইনি পাথর খাদানের কারবার চলে। ক্রাশার মেশিনে এই পাথরের চাঁইকে নানা মাপে ভেঙে ফেলা হয়৷ এই ভিন্ন মাপের পাথর বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়৷ কখনও রাস্তা, কখনও বাড়ির ছাদ তৈরিতে কাজে লাগানো হয়। সেই কারণে ভাঙা পাথরের দামও চড়া হতে থাকে৷ বর্তমানে ৩০০ সিএফটি ওই পাথরের দাম ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ বছরে কয়েকশো কোটি টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেআইনি কারবার চলে এই পাথর খাদান ঘিরে। আর তা  চলছে বন আধিকারিক ও পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের এই অভিযোগ পেয়ে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বনাধিকারিক ভাস্কর জেভির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

[আরও পড়ুন: প্রাচীন মন্দির সংস্কারে মিলল রহস্যময় পাথর, চাঞ্চল্য জগৎবল্লভপুরে]

স্থানীয় গঙ্গাজলঘাঁটি থানার পুলিশ জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি ভূমি দপ্তর ও বনদপ্তরের। তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেব আমরা।’ বেআইনি এই পাথর খাদানের দূষণ যে কী ভয়ঙ্কর মাত্রা নিয়েছে, তা বলার নয়। ডিনামাইটের শব্দে দেউলি গ্রামের একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছে। প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিলেই স্বস্তি মিলবে স্থানীয়দের৷

দেখুন ভিডিও:

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ