বিক্রম রায়, কোচবিহার: আমন্ত্রণ বিতর্কের মাঝেও সুষ্ঠভাবে মিটল কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। রাজ্যের তিন মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই চলে অনুষ্ঠান। আচার্যের অনুপস্থিতিতে উপাচার্যই সমাবর্তনে তাঁর ভূমিকা পালন করেন। পদকজয়ীদের সংবর্ধনাও দেন তিনিই। আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে আচার্যের তরফে এখনও কোনও শোকজ লেটার পাননি বলেই দাবি উপাচার্যের।
কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকা নিয়েই ফের রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন রাজ্যপাল। আমন্ত্রণপত্রে নেতামন্ত্রীদের নাম থাকলেও জানানো হয়নি আচার্য জগদীপ ধনকড়কে। তা নিয়ে চূড়ান্ত অসন্তুষ্ট হন তিনি। টুইটে ক্ষোভপ্রকাশ করেন জগদীপ ধনকড়। ‘আমরা কোন পথে এগিয়ে চলেছি’, সেই প্রশ্নও করেন তিনি। তবে শুধু টুইট করেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, কেন রাজ্যপালকে না জানিয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করা হল, সে বিষয়ে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়কে শোকজও করেন ধনকড়। যদিও শোকজ লেটার পাননি বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দেন উপাচার্য।
বাদানুবাদের মাঝেই শুক্রবার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ম্বরে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়। নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী। ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়ের পৌরহিত্যে পুরো অনুষ্ঠান নিজস্ব গতিতে এগোতে থাকে। ৩৯ জন পড়ুয়াকে স্বর্ণপদক এবং ৪৪ জনের হাতে রূপোর পদক তুলে দেন উপাচার্য। পঞ্চানন বর্মা স্মৃতি স্মারক পুরস্কার দেওয়া হয় প্রাক্তন সাংসদ প্রসেনজিৎ বর্মনকে।
[আরও পড়ুন: ১০০ বছর বয়সেও ফুরিয়ে যায় না প্রেমের টান, প্রমাণ করলেন রবীন্দ্রনাথ]
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ বিতর্ক নিয়ে রাজ্যপালকেই দুষছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে শোকজ করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন গৌতম দেব। মন্ত্রীর সুরেই সুর মেলান উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নিয়ম মেনে আমাকে শোকজ করা হয়নি। চিঠি পেলে উত্তর দেব।”
এর আগেও যাদবপুর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল তথা আচার্যের উপস্থিতি ঘিরে তুমুল অশান্তি হয়েছিল। রাজ্য বিধানসভায় বিল পাশ করে শিক্ষাক্ষেত্রে আচার্যের ক্ষমতা খর্ব করে রাজ্য সরকার। তারপরেও উপাচার্যদের রাজভবনে বৈঠকে ডাকেন জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। যদিও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না কেউই। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, রাজ্য সরকারের অনুমতি না থাকায় কোনও উপাচার্যই নাকি রাজভবনের বৈঠকে যাননি। শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আগুনে ঘৃতাহুতির মতো কাজ করল পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন।
ছবি: দেবাশিস বিশ্বাস