সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে শনিবারও উত্তাল যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য। গত কয়েক দিনের বিক্ষোভের জেরে এখনও পর্যন্ত মোট ১১ জনের প্রাণ গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। বিহারের অবস্থাও তথৈবচ। ঠিক এই সময়ে বাংলার পথে হেঁটে ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার (NPR) বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল কেরলের বাম সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে এনপিআর হবে না। সেই মতো বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে নবান্ন। এবার সেই পথে হাঁটল কেরলও। রাজ্যে ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রারের ক্ষেত্রে কর্মীদের অর্থাৎ ‘মাস্টার ট্রেনিং’-এর কাজ প্রায় শেষ। পরবর্তী পর্যায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম নথিভুক্তকরণের কাজ করার কথা। নবান্নের নির্দেশে আপাতত সেই কাজ বন্ধ।
[আরও পড়ুন: হিংসায় মদত দেয় এমন কিছু দেখানো যাবে না, টিভি চ্যানেলগুলিকে কড়া নির্দেশ কেন্দ্রের]
নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন নিয়ে সোনিয়া গান্ধীর ভিডিও বার্তা নিয়ে শনিবার প্রশান্ত কিশোর টুইট করেন, এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে রাস্তায় নেমে তেমনভাবে সরব হতে দেখা যায়নি কংগ্রেস নেতৃত্বকে। কংগ্রেস নেতারা মুখে যতই এনআরসির বিরোধিতা করুক। এই সব বিরোধিতার কোনও মানেই হয় না, যদি না কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের রাজ্যে এনআরসি হবে না। নাগরিক সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে চলতি বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে গোটা উত্তরপ্রদেশ। বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত শহর ও জনপদগুলিতে পরিস্থিত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দিনভর সংঘর্ষ, পাথর ছোঁড়া, খণ্ডযুদ্ধ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুর চলে। তাতেও কাজ না হলে পুলিশ গুলি চালায়। এর জেরে নিহত হয়েছেন ১১ জন।
[আরও পড়ুন: CAA বিক্ষোভ: ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরপ্রদেশে মৃত বেড়ে ১৫]
এনপিআর ও ২০২১ সালের জনগণনার কাজ একইসঙ্গে চলার কথা। সিটিজেনশিপ রুলস, ২০০৩ অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্তারিত তথ্য নিবন্ধীকরণ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই আধার কার্ডের কাজ হয়েছে। প্রথম পর্বে ২০১০ সালে এই কাজ শেষ হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে আবারও সেই কাজের সংশোধন করা হয়েছে। এবার মূলত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অসম বাদে দেশের অন্যত্র এই কাজ করার কথা। কিন্তু, একে একে অবিজেপি রাজ্যগুলিতে এই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
তবে রাজ্যগুলি কাজ বন্ধ রাখলেও কেন্দ্রের কাছে নিবন্ধীকরণের যাবতীয় তথ্য মজুত রয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সেই তথ্যের ভিত্তিতেই এনআরসি চালু করতে চায় বলে একটি সূত্রের খবর। নাগরিকত্ব রুলস, ২০০৩ যা এনপিআর রুলস নামে পরিচিত, সেখানে বলা হয়েছে যে পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া এদেশে এলে তাকে নাগরিক হিসেবে ধরা হবে না। এই বিষয়টি সূক্ষভাবে হলেও এনআরসির সঙ্গে জড়িত বলে বিশেষজ্ঞ মহলের মত। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলা ও কেরল এই নির্দেশিকা জারি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের এক আধিকারিকের মতে, যে কোনও সময় নির্দিষ্ট যুক্তির ভিত্তিতে এনপিআরের কাজ বন্ধ করে দিতে পারে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে বাংলা ও কেরল তাই করেছে।