সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক তিনদিনের ব্যবধানে ফের জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে চলল গুলি। যদিও ঘটনায় হতাহতের খবর নেই। রবিবার মধ্যরাতে হঠাৎই দুই বাইক আরোহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ নম্বর গেটের সামনে এসে উপস্থিত হয়। এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়েই দ্রুত পালিয়ে যায়। এখনও তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এদিকে, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের আগে ধারাবাহিকভাবে গুলিচালনার ঘটনা ঘিরে অপসারিত দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির ডিসিপি চিন্ময় বিসওয়াল। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা।
রবিবার মধ্যরাতে যে জায়গায় গুলি চলেছে, তা শাহিনবাগ থেকে মাত্র দু’ কিলোমিটার দূরে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই নিয়ে দিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (CAA) প্রতিবাদে তিনবার গুলি চলল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এই জামিয়া মিলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে CAA বিরোধী মিছিলের ঠিক আগে গুলি চলে। আহত হন এক পড়ুয়া। গুলি চালনার ঘটনায় এক নাবালককে গ্রেপ্তার করা হয়। আপাতত জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে বিচারাধীন সে।

[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্ক উড়িয়ে আইসোলেশন ক্যাম্পে উদ্দাম নাচ, ভিডিও ভাইরাল]
এরপর শনিবার শাহিনবাগে CAA বিরোধী আন্দোলনে কপিল গুজ্জর নামে আর এক যুবক গুলি চালায়। গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সে মন্তব্য করে, “হিন্দুস্তানে শুধু হিন্দুরাজই চলবে।” জামিয়া এবং শাহিনবাগের গুলিচালনার ঘটনায় পুলিশ সক্রিয় হয়েই গ্রেপ্তার করেছে দুই অভিযুক্তকে। রবিবার মাঝরাতের ঘটনার তদন্তে নেমে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, এদিন দুই যুবক লাল মোটরবাইকে চড়ে ঘটনাস্থলে এসেছিল। তাদের একজনের গায়ে ছিল লাল রঙের জ্যাকেট। ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত সেখানে ছুটে যান পুলিশ অফিসাররা। গোটা চত্বর তন্নতন্ন করে তল্লাশিও করেন। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে কোনও ফাঁকা কার্তুজের খোল মেলেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-সহ প্রত্যক্ষদর্শীদের এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে তাঁরা। আগামী ৮ তারিখ নির্বাচনের আগে পরপর তিনবার রাজধানীর বুকে এভাবে গুলি চলার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য দাবি আরও একবার জোরালো হয়ে উঠেছে।
[আরও পড়ুন: ‘কথা না শুনলেই চলবে গুলি’, দিল্লিতে যোগীর নিদানে বির্তকের ঝড়]
এদিকে, নির্বাচনের আগে দিল্লির একাংশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এভাবে ভেঙে পড়ায় উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন। কর্তব্যে গাফিলতির জেরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির ডিসিপি চিন্ময় বিসওয়ালকে। কমিশনের নির্দেশে রবিবার সন্ধেবেলাই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিল্লি নির্বাচনে এই সবকটি ঘটনাই বেশ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।