সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিযোগ ছিল, চাঁচাছোলা বক্তব্যের মাধ্যমে হিংসায় উসকানি দিচ্ছেন। আর সেই অভিযোগে চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকেই গ্রেপ্তার হলেন তামিল লেখক-বক্তা নেল্লাই কান্নান। নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল তামিলনাডুর পেরামবালুরের। কান্নানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সংবিধানের ৫০৪,৫০৫ এবং ৫০৫ (বি) ধারা অর্থাৎ ভিন সম্প্রদায়ের মানুষজনের প্রতি হিংসায় উসকানি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগে শুরু হয়েছে মামলা। এর প্রতিবাদে সরব বিশিষ্টজনেরা। বিশেষত যেভাবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
গত রবিবার তামিলনাড়ুর মেলাপালায়ামে CAA বিরোধী সমাবেশে তীব্র ভাষায় নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহর সমালোচনা করছিলেন সুবক্তা বলে পরিচিত নেল্লাই কান্নান। সেখানে তিনি বলেন, ”মোদির মস্তিষ্ক আসলে অমিত শাহ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।অমিত শাহ শেষ হয়ে গেলে, মোদিও শেষ হবেন।” এরপর তিনি এমন কিছু বলেন, যা কি না অমিত শাহর বিরুদ্ধে যে কোনওরকম ব্যবস্থা নিতে মুসলিম সমাজকে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, এরকম মনে করা হয়েছে। এই মর্মেই সোমবার বিজেপি তিরুনেলভেলির সভাপতি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর গ্রেপ্তারির দাবি তুলে বিক্ষোভও দেখান বিজেপি কর্মীরা। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধেবেলা পেরামবালুরের এক অতিথিশালা থেকে কান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এমনকী তিনি প্রতিরোধ গড়ারও কোনও সুযোগ পাননি বলে দাবি ঘনিষ্ঠদের।
[আরও পড়ুন: দশকের প্রথমদিন সবচেয়ে বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে ভারতে, অনেক পিছিয়ে চিন]
কিন্তু কান্নানকে গ্রেপ্তারির ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার যখন তাঁর বাড়ির সামনে ধরনা, বিক্ষোভ চলছিল, তখন পরিস্থিতি দেখে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মাদুরাইয়ে অন্য একটি হাসপাতালে রেফার করে দেয়। তারপর গ্রেপ্তার হওয়া পর্যন্ত তাঁর কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। মাঝের সময় তিনি কোথায় ছিলেন, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তিনি অসুস্থ, ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই অবস্থায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা আইনরক্ষকদের কতটা এক্তিয়ারের মধ্যে, সেই প্রশ্নও উঠছে। পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু হিংসায় উসকানি দেওয়ার ধারাই নয়, পরে প্রয়োজনে কান্নানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সংবিধানের অন্যান্য ধারাও লাগু হতে পারে।