Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja 2023

হারিয়ে গিয়েছে ‘দ‍্যাশ’, মধুসূদন কাকার আকুতিটা বড্ড মনে পড়ে

হারিয়ে গিয়েছে ছোটবেলার পুজো।

Durga Puja 2023: Memories of Durga Puja festival by Piyas Gargari। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:October 19, 2023 9:19 pm
  • Updated:October 19, 2023 9:19 pm

পিয়াস গড়গড়ি: “আমাগো একখান দ‍্যাশ আসিল! হেইখানে বড় কইরা প্রতি বৎসর হইত দুগ্গাপূজা, বাঙালির সবচাইতে বড় উৎসব। প্রতিমাখানাই বানানো হইত এক মাস ধইরা, আমাগো হক্কল পোলাগুলি দল বাঁইধা যাইত ঠাকুর দ‍্যাখতে। কাশবনের ভিতর দিয়া যাইতে যে কী মজা, সে তুমি কল্পনাও করতে পারবা না। শশী পুরোহিতের গমগমে গলায় সেই মন্ত্র উচ্চারণ, তার লগে জামিলচাচার ভাইপোডার সেই ঢাকের বাদ্যি- এই দ‍্যাহো গায়ে যেন কাঁটা দিতাসে! গ্রামের হক্কল মাইনষে ভেদাভেদ ভুইল্যা পূজার কয়টা দিন পইড়া থাকত চণ্ডীমণ্ডপে। একসাথে মিল্যা উৎসব পালনের যে কী আনন্দ, সে যদি দেখতে বাজান! শুনছ বাজান, শুনছ…” শেষের দিকে গলা ধরে আসত মধুসূদনকাকার।

মধুসূদনকাকার কথা খুব মনে পড়ছে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ‘দ‍্যাশের পূজা’ দেখবার জন্য মানুষটার কী অসম্ভব আকুতি আজ হঠাৎ মনে পড়ে গেল। বিদেশের মাটিতে দূর থেকে ভেসে আসা ঢাকের আওয়াজ যেন ছোট্ট এক টুকরো পুজোর স্মৃতি মনের মধ্যে জাগিয়ে তোলে। আমাদের বাড়ির সামনে দুর্গাপুজো হত। পাড়ার ক্লাবের বারোয়ারি পুজো। আমরা সমস্ত ছোটরা সারারাত জেগে কোমর বেঁধে সমস্ত আয়োজন করতাম। প্রতিমা কেনা, সরঞ্জাম জোগাড়, পাত পেড়ে খাওয়ানো, পুজোর চারটে দিন কীভাবে হুশ করে বেরিয়ে যেত টেরই পেতাম না।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ঢাকায় বসে ভারতের জন্য একাই লড়ছেন সৃজিত, ‘দশম অবতার’ মুক্তির দিন শ্বশুরবাড়িতে ‘গৃহযুদ্ধ’!]

আর ছিল তার সঙ্গে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখা। কোন ঠাকুর কত বড়, কোন পুজোর থিম এবার কী, কাদের মণ্ডপসজ্জা সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেখতে দেখতে রাত কখন ভোর হয়ে যেত। অথচ ক্লান্তি স্পর্শ করত না আমাদের। আর তার সঙ্গে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে ভেলপুরী, আলুকাবলি, ঘুগনি, ফুচকা, চটপটি… চটকা ভেঙে উঠে বসলাম। এই বিদেশের মাটিতে এসব অলীক দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়। পুজো এখানেও হয়, অনেক বাঙালি মিলে সার্বজনীন দুর্গোৎসব। কিন্তু দেশের সেই পুজোর স্বাদ কোথায়! দূর দূর এলাকার মধ‍্যে একটা কী দুটো পুজো। সেই প‍্যান্ডেলে প‍্যান্ডেলে ঘোরাও নেই, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ফুচকা, ঘুগনি খাওয়াও নেই। এখানে আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ দেখে বোঝা যায়, মা আসবে। কিন্তু পাই না সেই পুজোর গন্ধ, এক মাস থেকে কুমোরপাড়ার হাঁকডাক, তোড়জোড়, ব্যস্ততা। যান্ত্রিক সভ্যতার মাঝে হারিয়ে গিয়েছে এক টুকরো অযান্ত্রিক অবকাশ!

Advertisement

[আরও পড়ুন: মহালয়া থেকেই জনজোয়ার, পঞ্চমীর সন্ধেয় বন্ধ হয়ে গেল শ্রীভূমির ‘ডিজনিল্যান্ডে’র লাইট শো]

অজান্তেই চোখের কোণটা ভিজে ওঠে। মধুসূদনকাকা, তুমি ঠিকই বলেছ। “আমাগো একখান দ‍্যাশ আসিল! হেইখানে বড় কইরা প্রতি বৎসর হইত দুগ্গাপূজা…”

হারিয়ে গিয়েছে আমার ছোটবেলার পুজো, হারিয়ে গিয়েছে আমার “দ‍্যাশ”। কিংবা হারিয়ে গিয়েছি হয়তো আমার পুজোর সেই আমিই!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ