Advertisement
Advertisement
Sujay prasad chatterjee

ফলোয়ার্স সংখ্যা যদি আমার প্রতিভার নির্ণায়ক হয় সেটা খুব লজ্জার: সুজয় প্রসাদ

আর কী বললেন সুজয়?

Exclusive interview sujay prasad chatterjee
Published by: Akash Misra
  • Posted:April 29, 2024 3:52 pm
  • Updated:April 29, 2024 5:30 pm

৪ মে, শিশির মঞ্চে বাচিক শিল্পী, অভিনেতা সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের ‘জার্নিস’ শীর্ষক বিশেষ উপস্থাপনা। তার আগে খোলা মনের আড্ডায় শিল্পী। শুনলেন শম্পালী মৌলিক।

প্রায় ২১ বছর কাটিয়ে ফেললেন কবিতা সঙ্গে করে। ফিরে তাকালে কী মনে হয়?
সুজয় প্রসাদ: একুশ বছরের যাপন তো শুধুমাত্র কবিতার সঙ্গে নয়, আর আমি কেবলই বাচিক শিল্পী নই। তবে কবিতা পাঠের ক্ষেত্রে আমি একটা পরিসর সৃষ্টি করতে পেরেছি। এই পরিসর শুধুমাত্র আবৃত্তি করে করা যায় না, এই সময়ে দাঁড়িয়ে। আত্মবিশ্বাস থেকে বললাম ঔদ্ধত‌্য নয়।

Advertisement

‘জার্নিস’ আপনার একক অনুষ্ঠান। ৪ মে শিশির মঞ্চে, কী বিশেষত্ব এর? কী পড়বেন সেদিন?
সুজয় প্রসাদ: ৪ মে, ‘জার্নিস’ শীর্ষক যে উপস্থাপনা সেটি আসলে দ্বৈত পরিবেশনা। লাইভ মিউজিক বাদনে ও পরিকল্পনায় শিবাশিস বন্দ্যোপাধ‌্যায় আর পাঠে থাকছি আমি। এই অনুষ্ঠান আগে মুম্বই ও বেঙ্গালুরুতে হয়েছে। তবে কলকাতায় এই প্রথমবার। বিশেষত্ব বোধহয় একটাই– এই অনুষ্ঠান আমার অন্তরের নিভৃত‌ চারণ ও উচ্চারণ। যা কিছু আমি এই সময়ে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, সেটাই বলব। মল্লিকা সেনগুপ্তর ‘রামরাজ‌্য’, বব ডিলানের ‘লং অ‌্যাগো ফার অ‌্যাওয়ে’, লেনার্ড কোহেনের কবিতা, জ‌্যাক লন্ডনের চিঠি, দেবারতি মিত্রর কবিতা, আমির আজিজের ‘সব ইয়াদ রাক্‌খা যায়েগা’ ইত‌্যাদি পড়ার পরিকল্পনা আছে।
দিল্লির ইন্ডিয়ান ইন্টারন‌্যাশনাল সেন্টার থেকে ডাক এসেছে। দিল্লিতে অনুষ্ঠান ১১ মে?
সুজয় প্রসাদ: হ্যাঁ, দিল্লি আইআইসি থেকে সরাসরি আমন্ত্রণ কলকাতার কোনও বাচিক শিল্পী আগে পেয়েছেন কি না আমার জানা নেই। শুধু জানি যে, কোনও বাঙালি সংস্থা আমায় স্বীকৃতি দিয়ে নিয়ে যায়নি। সুতরাং এটা আমার কাছে জাতীয় স্বীকৃতি। এই যে ২০০৩ সাল থেকে প্রসেনিয়ামের বাইরে বেরিয়ে এসে স্পেস ও দর্শক তৈরি করা এক্ষেত্রে আমি খানিকটা হলেও পথপ্রদর্শক।
বাচিক শিল্প নির্ভর জীবনযাত্রা বেছে নিতে দোলাচল হয়নি? কারণ অর্থ চিন্তা সকলের থাকে।
সুজয় প্রসাদ: দোলাচল হবে বলেই তো আমি এখনও ম‌্যানেজমেন্ট কনসালটেন্সি করি। কলকাতা শহরে বাচিক চক্রের কাছে আমার তিন রকমের পরিচয় আছে– ‘সুজয় ভীষণ দামি’, ‘সুজয় এমন কী আর কবিতা বলে, ও তো বসে বসে পড়ে’ আর ‘ও তো সমকামী ও সব থেকে দূরে থাকাই ভালো’। ব‌্যতিক্রম আছে বলেই তো সুবোধ সরকার নিজে উদ্যোগ নিয়ে শিশির মঞ্চে আমাকে সুযোগ করে দিলেন। আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। আমি বোধ হয় এই প্রথম রাজ‌্য সরকারের কোনও প্রেক্ষাগৃহে নিজের অনুষ্ঠান করছি।

Advertisement

No photo description available.

অভিনয়ের জগতে আপনাকে পাওয়া যাচ্ছে, আড্ডাটাইমস-এর ‘জুলি’-তে কাজ করলেন। আর কী কী রয়েছে সামনে?
সুজয় প্রসাদ: হ্যাঁ, আড্ডাটাইমস-এ আমি অরিত্র সেনের পরিচালনায় ‘জুলি’ সিরিজে রাজনীতিবীদের চরিত্রে অভিনয় করছি। আমার দুই বন্ধু– চৈতি ঘোষালের পরিচালনায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর প্রযোজনায় ‘নেভার মাইন্ড’ ছবিতে অভিনয় করলাম সম্প্রতি। আর সোহাগ সেনের নির্দেশনায় ‘অনসম্বল’-এর নতুন নাটক ‘ভীতি’-তে অভিনয় করছি। ২৭ মে তপন থিয়েটারে এবং ২ জুন ‘মধুসূদন’ মঞ্চে এই নাটকের শো আছে।

[আরও পড়ুন: ‘আমায় একটু সময় দিন’, মুম্বই পুলিশের কাছে কাতর আর্জি তামান্না ভাটিয়ার!]

সিনেমায় ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’-তে দর্শক পেয়েছে আপনাকে সাম্প্রতিককালে। তবু বলব কম সংখ‌্যক সিনেমা, সিরিজে ডাক পাচ্ছেন। কেন মনে হয়?
সুজয় প্রসাদ: ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’ ছবিতে একটা ছোট্ট ভূমিকাতেও আমার কাজ নিয়ে দর্শক উচ্ছ্বসিত। কত জন যে আমাকে বলেছেন, ‘এরকম প্রতিবেশী পেলে তাঁরা খুশি হতেন।’ কিন্তু পরিচালক, বা প্রযোজকদের খুশি করতে পারিনি। আগে আক্ষেপ হত। এখন কম হয়। কারণ আমি জানি যে, অনেক মানুষ আমাকে নিয়ে নিরাপত্তহীনতায় ভোগেন। কারণ আমার কথা বলার ধরন, আমার লেখাপড়া, সহজ ব‌্যবহার এবং আমার বোধ। আর বলি, আমার কাজ চাইতে লজ্জা নেই। এই তো কোয়েল এবং রানেকে (নিসপাল সিং) বলেছিলাম আমাকে কাজ দিতে। ওরা তো দিল। আমি কিন্তু রানেকে কোনও উপহার পাঠাইনি। পেশাদারিত্বের একটা মজা ও গভীরতা আছে। এটা ইন্ডাস্ট্রির কতজন বোঝেন!

No photo description available.

রোল পাওয়ার ক্ষেত্রে ফলোয়ার্স, রিলস এসব মাপকাঠি চলে এসেছে এখন এবং প্রযোজক-পরিচালকেরও ভূমিকা থাকে কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে। আপনি নিজে রোলের জন‌্য বলতে পারেন?
সুজয় প্রসাদ: হ‌্যাঁ, কাজের জন‌্য বলতে পারি আগেই বললাম। আর সমাজমাধ‌্যমে ভক্ত সংখ‌্যা যদি আমার প্রতিভার নির্ণায়ক হয় সেটা অত‌্যন্ত লজ্জার। আমার প্রতিভার একমাত্র নির্ণায়ক আমার কাজ। সৃজিত যখন আমাকে ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ ছবিতে নির্বাচন করেছিল তখন ওর মাপকাঠি, আমার ফলোয়ার্স ছিল না। ও জানত আমার ঋজুতা ও ধার। তাই আমি অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমার অ‌্যান্ড্রোজিনিটাও তো ইন্ডাস্ট্রি সদ্ব্যবহার করতে পারত। পারল কই? অরিত্রর সঙ্গে অনেক কাজ হয়, তার একটাই কারণ ও এখানে শিকার বা বন্ধুবৃত্তি করতে আসেনি। যে দিন কাজটা মুখ‌্য হয়ে উঠবে, সেদিনই বড় হয়ে উঠবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
কার কার সঙ্গে অভিনয়ের ইচ্ছে?
সুজয় প্রসাদ: আমার ভীষণ ইচ্ছে করে শেফালি শাহ, কঙ্কণা সেনশর্মা, অনন‌্যা চট্টোপাধ‌্যায় এবং রাজকুমার রাওয়ের সঙ্গে কাজ করার। ইচ্ছে করে ঋত্বিক চক্রবর্তী আর রাহুলের সঙ্গে কাজ করতে। আর দেবের প্রোডাকশনে কাজ করতে আমার কোনও অসুবিধে নেই।
আপনার ভোট ভাবনা কেমন?
সুজয় প্রসাদ: আমার জানতে ইচ্ছে করে আমাদের এখানে ফ্রান্সের গ্যাব্রিয়াল অ্যাটেল , কানাডার ট্রুডোর মতো যদি কেউ রাজনৈতিক স্তরে থাকতেন মানুষের ভোট ভাবনা কী হত। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই যে ইনক্লুসিভিটি নিয়ে এত কথা হয়, রাজনৈতিক স্তরে এলজিবিটি রিপ্রেজেন্টেশন কোথায়!

[আরও পড়ুন: গ্রেপ্তারির ভয়ে চার দিনে ৬ রাজ্যে গা ঢাকা! তাও শেষ রক্ষা হয়নি সাহিল খানের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ