কৃষ্ণকুমার দাস, যোধপুর: ক’মাস আগেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন। বিজেপির সেই হেভিওয়েট নেত্রী বসুন্ধরা রাজে-কে এই লোকসভা ভোটের মরশুমে দূরবীনে খুঁজতে হচ্ছে। একেবারে নেই যে তা নয়, মাঝেমধ্যে উদয় হচ্ছেন। কিন্তু, তাঁর কর্মসূচি সম্পর্কে দলের কোনও রাজ্য নেতাই আগাম আঁচ করতে পারছেন না। পরিস্থিতি এমনই যে তাঁকে প্রচারে নামাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে।
এর ফলে বোঝা যাচ্ছে দলের সঙ্গে সম্পর্কটা এখনও স্বাভাবিক হয়নি বসুন্ধরার। ঘটনার সূত্রপাত, গত বিধানসভা নির্বাচনের অনেকটা আগে। বসুন্ধরা রাজের পরামর্শ না মেনে দলের রাজ্য সভাপতি করাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে চলে আসে সংঘাত। পরে দল অনেক চেষ্টা করেও তাঁর মন গলাতে পারেনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, রাজস্থানের বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের জন্য রাজ্যে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব অনেকটাই দায়ী।
বসুন্ধরার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, নেত্রী নাকি রাজনীতি নিয়েই হতাশ। তাই লোকসভা ভোটের প্রচার থেকে উধাও। যতটুকু থাকছেন, তা নিয়মরক্ষায় এবং নিজের ইচ্ছায়। উদয়পুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী জনসভার মঞ্চে বসুন্ধরাকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, তারপর থেকে তিনি উধাও! সূত্রের খবর, অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে না-খুশ বসুন্ধরা। তিনি দীর্ঘসময় রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী থাকায় ভাল জানেন, কোথায় কোন প্রার্থীকে দাঁড় করালে তাঁরা জিততে পারেন। কিন্তু, প্রার্থী নিয়ে তাঁর মতামত মানা হয়নি।
শুক্রবার যোধপুরে প্রচারে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেই কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজ্য নেতারা আলোচনায় বসেন। দুপুরে ওই কর্মসূচিতে কারা থাকবেন সেই সংক্রান্ত তালিকা তৈরি হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, সেই তালিকায় নেই বসুন্ধরার নাম। অথচ, সেখানে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, হেমা মালিনীর মতো নেতা-নেত্রীর নাম রয়েছে। তাঁদের এলাকার ভোট মিটে যাওয়ায় তাঁরা এখন অন্য রাজ্যে দলের হয়ে প্রচারে নেমেছেন।
এবিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি মদনলাল সাইনির কথায় তীব্র অসন্তোষই ধরা পড়ল। বললেন, “ওঁর (বসুন্ধরা) কর্মসূচি উনি নিজেই ঠিক করেন। তবে আমরা খোঁজ নেব।” ২৯ এপ্রিল রাজস্থানে প্রথম দফার ভোট। ভোট হবে খাস উদয়পুর, যোধপুর, বারমেঢ়, রাজসমন্দ, আজমেঢ়, ঝালোয়ার, কোটা ও বনশওয়াড়ার মতো ১৩টি আসনে। তাই শেষ লগ্নের প্রচারে সব রাজনৈতিক দলই ব্যস্ত। বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস প্রচারে নামিয়েছে
মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে। সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরাকে প্রচারে সেভাবে চোখে না পড়ায় বেশ অপ্রস্তুতে বিজেপি। রাজ্যে বসুন্ধরার ভাল জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাঁকে প্রচারে না নামানো গেলে অসুবিধায় পড়তে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেজন্য দল থেকে বসুন্ধরাকে প্রচারে নামার জন্য চাপও দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে নির্দেশ আসতে পারে বসুন্ধরার কাছে। তাতে কাজ না হলে, তিনি দলের কোপেও পড়তে পারেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.