Advertisement
Advertisement
COVID-19

বয়স্কদের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে করোনা, প্রমাণ দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

এবিষয়ে ঠিক কী বললেন চিকিৎসকরা?

Corona is causing serious danger for the elderly, | SangbadPratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 4, 2020 1:50 pm
  • Updated:November 4, 2020 3:15 pm

অভিরূপ দাস: ‘ম্যাটিনি আইডল’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee) উদাহারণ। প্রতিপদে বুঝিয়ে দিচ্ছেন কতটা মারাত্মক করোনা (Coronavirus)। নেগেটিভ হলেও রেহাই নেই। মস্তিষ্কের সংক্রমণে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন যে কেউ। চেয়ার টেবিলের মতো স্থির হয়ে যাবেন সারা জীবনের জন্য।

করোনা নেগেটিভও হয়েছিলেন ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান লিজিয়ঁ দ্য নর জয়ী কিংবদন্তী অভিনেতা। কিন্তু তার পরেও ঝিমিয়ে রয়েছেন। ক্রমশ নামছে তাঁর জিসিএস স্কেল। যে স্কেল নিয়ে আপাতত আলোচনা চরমে। কি এই গ্লাসগো কোমা স্কেল? যে স্কেলের সূচক ১৪/১৫ থাকা মানে সুস্থ স্বাভাবিক রয়েছে মানুষটি। ৩-এ নেমে গেলেই ব্রেন ডেথ ধরা হয়। শহরের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা ভাইরাস কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আঘাত করছে। আর তাতেই নামছে এই স্কেলের সূচক।

Advertisement

প্রথমে ফুসফুসেই আঘাত হানছে ভাইরাস। ধীরে ধীরে তা রক্তে মিশে পৌঁছে যাচ্ছে মস্তিষ্কে। মস্তিষ্কে চেতনা সজাগ রাগে যে ব্যবস্থা তারই পোষাকি নাম রেটিকিউলার অ্যাক্টিভেটিং সিস্টেম (আরএএস)। তা নষ্ট হয়ে গেলে কি হবে? শহরের প্রখ্যাত নিউরো সার্জন ডা. অমিতকুমার ঘোষের কথায়, প্রচুর ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিলে মানুষ যেমন ঝিমিয়ে থাকে, আরএএস বিকল হয়ে গেলে তেমনই দশা। সবসময় দেখলে মনে হবে যেনো ঘুমে চোখ ঢলে পড়ছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ ঘিরে বোমাবাজি ও গুলিতে রণক্ষেত্র মুর্শিদাবাদ, প্রাণ গেল নিরীহের]

শুধু ষাট পেরনোদের নয়, অল্পবয়সীদেরও কোমায় ফেলে দিতে পারে করোনা। তবে অনেকক্ষেত্রে তাঁরা বেঁচে যাচ্ছেন প্লাস্টিসিটির জন্য। যে কোনও কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা নিজেকে পুর্নগঠন করে। চিকিৎসা পরিভাষায় সেটাই প্লাস্টিসিটি। ভাইরাস কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আঘাত করলেও বয়স অল্প হওয়ার কারণে সদ্য একুশ পেরনো যুবকের আঘাত প্রাপ্ত কোষগুলি সহজেই নিজেকে মেরামত করে নিতে পারছে। এই নিউরোপ্লাস্টিসিটি কাজ করছে না প্রৌঢ়দের ক্ষেত্রে। এছাড়াও অল্পবয়সীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ার কারণে ভাইরাল লোড বেশি হলেও তারা লড়াই দিতে পারছেন। কিন্তু ষাটোর্ধদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ওভারটেক করে দিচ্ছে ভাইরাল লোড।শুধু তাই নয়, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য অসুখ মাথাচাড়া দেওয়াও একটা প্রধান কারণ।

শহরের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসও জানিয়েছেন, যে কোনও ভাইরাসই মস্তিষ্কে আঘাত করে।কোভিডের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হচ্ছে না। মস্তিষ্কে প্রবেশ করেই কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক কাজকর্ম নষ্ট করে দিচ্ছে করোনা। অনেক সময় সে আঘাত এতটাই গভীর যে কোভিড নেগেটিভ হলেও কোমা স্টেজ কাটছে না। কোভিড রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বয়স, কোমর্বিডিটি এসবের উপর নির্ভর করে কোমা থেকে তিনি আদৌ ফিরতে পারবেন কি না। রাজ্যের নথিভুক্ত ক্যানসার আক্রান্ত রোগী ৭০ হাজার। ক্যানসার রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত দুর্বল। ফলে স্নায়ুতন্ত্র আঘাত প্রাপ্ত হলেও সাড়িয়ে তোলা অসম্ভবের কাছাকাছি।

এ ধরণের কোমর্বিডিটি স্নায়ুতন্ত্র পুর্নগঠনের কাজে অন্তরায়।রাজ্যে ষাটোর্ধ ব্যক্তির সংখ্যাও কম নয়। শেষ জনগণনায় ষাটোর্ধ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৭৪ লক্ষ ৯০ হাজার ৫১৪। এই বিপুল সংখ্যক বয়স্কদের কোমা থেকে ফিরে আসা কার্যত অসম্ভব বলেই জানিয়েছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা। ডা. অমিতকুমার ঘোষের কথায়, এরপরেও কোভিড নিয়ে সচেতনতা না আসলে একটা গোটা প্রজন্ম বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

[আরও পড়ুন: ফের মধ্যাহ্নভোজের জনসংযোগ কর্মসূচি বিজেপির, রাজ্যে মতুয়া বাড়িতেই খাওয়াদাওয়া করবেন শাহ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ