Advertisement
Advertisement

Breaking News

হুকিংয়ের জেরে রাজ্যে বিদ্যুৎ অপচয় ৬০%, চুরিতে এগিয়ে দুই ২৪ পরগনা

একটি কেন্দ্রেই ৬৭ হাজার গ্রাহকের বকেয়া ২৮ কোটি টাকা।

24 Pargana's district areas guilty of major power theft

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 7, 2017 4:29 am
  • Updated:September 20, 2019 5:50 pm

সন্দীপ চক্রবর্তী: রাজ্যে বিদ্যুতের একটি কাস্টমার কেয়ার সেন্টারেই গ্রাহকদের বিলে মোট বকেয়া ২৮ কোটি টাকার বেশি!
সেই কেন্দ্রেই হুকিং বা চুরির জন্য বিদ্যুৎ অপচয়ের পরিমাণ ৮০ শতাংশের বেশি! যাঁরা স্বীকৃত বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন, তাঁরাই টাকা মেটাতে চাইছেন না। তাঁদের যুক্তি, আশপাশের বহু লোক অর্থাৎ প্রতিবেশীরাই হুকিং করে প্রতিদিনের চাহিদা মেটাচ্ছেন। ফলে নিখরচায় মিললে কেন তাঁরা টাকা দিতে যাবেন!

অদ্ভুত যুক্তি! অবাক বিদ্যুতের কর্তারাও। কেউ কোনও টাকা না দিয়ে ঘরে আলো জ্বালাবেন, আর কেউ দিনের পর দিন সঠিক সময়ে টাকা জমা করে যাবেন! বিদ্যুৎ চুরির জন্যই গ্রামে লো ভোল্টেজের সমস্যা বাড়ে বলে রিপোর্ট দপ্তরের।

Advertisement

[সস্তায় ২০ হাজারে বাইক কিনেছেন? ঠিকানা হতে পারে শ্রীঘর]

উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের ভাবিয়া কাস্টমার কেয়ার কেন্দ্রে মোট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৬৭ হাজার। সেই কেন্দ্রেই ২৮ কোটি টাকার বকেয়া বিল থাকায় অভিয়ানে নেমেছিল রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। কোনও কেন্দ্রে গ্রাহকদের থেকে প্রাপ্য টাকার ভিত্তিতে এটা একটা রেকর্ডও বটে। তবে অভিযোগ ছিল, বড় সংখ্যার মানুষ দিনেদুপুরে হুকিং করছেন। ফলে অন্যদের মধ্যেও টাকা না মেটানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে বকেয়া আদায় ও হুকিং বন্ধের অভিযান চালিয়ে নিগৃহীত ও কার্যত মার খেতে হয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের। ভাঙচুর করা হয়েছে স্থানীয় কাস্টমার কেয়ার সেন্টারটিও।

Advertisement

হুকিংয়ের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে জনপ্রতিনিধিদের পাশে নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিষয়টির স্থায়ী নিষ্পত্তি করতে চাইছেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তবে কর্মী ও আধিকারিকদের একটি অংশ কড়া আইন প্রয়োগের কথা বলছেন। তবে শীর্ষ স্তরের বক্তব্য, অ্যাব কেবলিং চালু হলে হুকিংয়ের কোনও সমস্যা থাকবে না। সেই কারণে দ্রুত মাটির নিচে কেবল লাইন পাতার কাজ শুরু করেছে রাজ্য।

[আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বাড়বে দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা, রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাসও]

বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এলাকায় রাজ্যে হুকিংয়ের কারণেই ৬০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ অপচয় বা ক্ষতি হচ্ছে। তথ্য পেয়ে এবার অবাক দপ্তরের আধিকারিকরা। হুকিংয়ের জেরে কোথায় কোথায় বিদ্যুতের অহেতুক অপচয় হচ্ছে, সে ব্যাপারে তালিকা তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের তথ্যে স্পষ্ট, সব থেকে বেশি হুকিংয়ের পরিসংখ্যান রয়েছে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান এবং নদিয়ার সীমানা এলাকায়। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমা এলাকায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। উত্তরবঙ্গে এবং মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুরে এটিসি ক্ষতির পরিমাণ খুব কম। মোট উৎপাদিত শক্তির থেকে বিল করা শক্তিকে একশো দিয়ে গুণ করে উৎপাদিত এনার্জিকে দিয়ে ভাগ করলে এটিসি লস অর্থাৎ এগ্রিগেট টেকনিক্যাল ও কমার্শিয়াল লস বোঝায়।

২০১২ সালের শুরুর দিকে মগরাহাটে হুকিং বন্ধে অভিযান চালানোর সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছিল। সেই জেলার ক্যানিংয়ের একটি কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে ৯২ শতাংশ, অন্য দুই কেন্দ্রে ৮৭ ও ৮০.২৫ শতাংশ এটিসি লস বা অপচয় হয়। বারুইপুরে ৯০ শতাংশ, জিরাট বা আমডাঙাতেও একই রকম হারে বিদ্যুতের অপচয় হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, বেহালা, ডায়মন্ডহারবারে যথাক্রমে প্রায় ৭১, ৮৪ ও ৮০ শতাংশ। বিদ্যুৎ দপ্তরের পদস্থ এক আধিকারিক মনে করছেন, ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় আইনে বিদ্যুৎ চুরিতে কড়া ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল। আইনের ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু তা বলবৎ করার উপায় নেই। পুলিশও মগরাহাটের ঘটনার পর বিশেষ নজর দেয় না। বিশেষ বাহিনী তৈরির পাশাপাশি ফাস্ট ট্র‌্যাক কোর্টে বিচারের সুযোগ করা যায়। জরিমানা বা শাস্তি না হলে বিশেষ কোনও লাভ হবে না। প্রচারপুস্তিকা বা সাইন বোর্ড টাঙিয়ে বেশ কিছু এলাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগানো প্রায় দুষ্কর।

[নয়া ভবনে ঠাঁই হয়নি দেবদেবীর, বিষাদে বহরমপুর থানার পুলিশ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ