Advertisement
Advertisement

Breaking News

চোরাশিকার

গ্রামবাসীদের মদতেই চোরাশিকারের বাড়বাড়ন্ত! মইপিঠের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

চোরাশিকারিকে বাঁচাতেই রেঞ্জারদের উপর হামলা, অনুমান বনকর্তাদের৷

A part of villagers in Moipith engaged of poaching tigers in Sundarban
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 21, 2019 5:02 pm
  • Updated:April 21, 2019 5:18 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুন্দরবন সংলগ্ন মইপিঠের এক গ্রামে চোরাশিকার বিরোধী অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত বনকর্তা, কর্মী-সহ বেশ কয়েকজন৷ বছর উনষাটের ডেপুটি রেঞ্জারের মেরুদণ্ডে আঘাত গুরুতর৷ আহত দশ বনকর্মীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷  যা নিয়ে বেশ চিন্তায় বনদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্তারা৷ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি৷ কিন্তু কেন এমন আক্রমণের মুখে পড়লেন রেঞ্জাররা? নেপথ্য ঘটনা কী?  পশ্চিমবঙ্গ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বোর্ডের সদস্য জয়দীপ কুণ্ডুর সঙ্গে কথা বলে সেসব বোঝার চেষ্টা করলাম আমরা৷

গত ৯ তারিখ সুন্দরবনের আজমলমারির জঙ্গল একটি বাঘের মৃতদেহ দেখতে পান মৎস্যজীবীরা৷ সেটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বলে চিহ্নিত হওয়ার পর উপরমহলের নির্দেশে মৃত্যুর তদন্তে নামেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা৷ তাঁদের কাছে গোপন সূত্রে খবর ছিল, মইপিঠ কোস্টাল থানা এলাকার পূর্ব গুড়গুড়িয়া গ্রামের মনসাতলায় এক চোরাশিকারি আশ্রয় নিয়েছে৷ গ্রামবাসীদের একাংশের মদতেই সে গ্রামের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে ওই অপরাধী৷ সেইমতো শনিবার গভীর রাতে মইপিঠের ডিএফও সন্তোষা জিয়ার নেতৃত্বে বনদপ্তরের কয়েকজন কর্মী অভিযান চালান৷ গ্রামে ঢোকামাত্রই তাঁরা আক্রান্ত হন৷ গ্রামবাসীদের একাংশ তাঁদের পিটিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় বলেই অভিযোগ বনদপ্তরের৷

Advertisement

[আরও পড়ুন : রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মৃত্যুর তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত ডিএফও-সহ ৮ বনকর্মী]

পশ্চিমবঙ্গ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বোর্ডের সদস্য জয়দীপ কুণ্ডুর অনুমান, ডিএফও এবং অন্যান্য বনকর্মীরা যে অভিযুক্ত চোরাশিকারীর খোঁজে অভিযান চালাতে পারেন, তেমন খবর আগে থেকেই ছিল পূর্ব গুড়গুড়িয়া গ্রামে৷ তাই অত রাতে গ্রামবাসীরা সজাগ ছিলেন৷ বনকর্মীরা গ্রামে পা দিতেই শঙ্খ বাজিয়ে রীতিমত শোরগোল তৈরি করেন তাঁরা৷ এরপরই চড়াও হন অভিযানে যাওয়া বনকর্মীদের উপর৷ কাস্তে, কাটারি, বাঁশ-সহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে প্রহারের ধরন দেখে বনদপ্তরের কর্তারা প্রায় নিশ্চিত যে অভিযুক্ত চোরাশিকারিকে বাঁচানোর জন্য বনকর্মীদের হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল৷

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘দিল্লি থেকে পুলিশ আনলেও একটি আসনও পাবে না’, বিজেপিকে হুঁশিয়ারি মমতার]

আর এতেই সন্দেহ আরও গাঢ় হচ্ছে৷ চোরাশিকারিদের সঙ্গে পূর্ব গুড়গুড়িয়া গ্রামের একাংশের রীতিমত যোগসাজশ আছে৷ বেআইনি কারবারের যুক্ত গ্রামবাসীদের মধ্যেই কেউ কেউ৷ নাহলে চোরাশিকারিকে গ্রামের ভিতর নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া হল কেন? কেনই বা বনকর্মীদের উপর হামলা? তবে এবিষয়েও বনকর্তারা নিশ্চিত, গ্রামের সকলেই এমন বেআইনি কাজ সমর্থন করেন না৷ সূত্রের খবর, গ্রামবাসীদের একটা ছোট অংশ বন্যপ্রাণ বাঁচাতে তৎপর৷ সুন্দরবনের জঙ্গল লাগোয়া এসমস্ত ‘বাফার ভিলেজ’-এর বাসিন্দা হওয়ার সুযোগে তাঁরা বনদপ্তরের কর্মীদের সাহায্যই করেন৷ তা সত্বেও শনিবার রাতের এমন আকস্মিক, অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে গেল৷

[আরও পড়ুন : বিরল লঙ্গুর ও বিন্টুরঙের খোঁজ মিলল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে]

জয়দীপ কুণ্ডু জানাচ্ছেন, সুন্দরবনের কুলতলি, মইপিঠের মতো এলাকায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপের রীতিমতো আখড়া৷ যে চোরাশিকারি পূর্ব গুড়গুড়িয়া গ্রামে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে, তার বিরুদ্ধেও একাধিক অপরাধমূলক কার্যকলাপের রেকর্ড আছে বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর৷ বন্যপ্রাণ বাঁচানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব জঙ্গল লাগোয়া এসমস্ত কোর এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন বনকর্তারা৷ কিন্তু সেখানেই বাধা পাচ্ছে বনদপ্তর৷ তাই সুন্দরবন এলাকা থেকে চোরাশিকার বন্ধ করা কার্যত বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তাঁরা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ