Advertisement
Advertisement

Breaking News

Irfan Pathan

‘রাজনীতি নয়, দাদা মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছে’, বহরমপুরে অকপট ইরফান

ইরফান বললেন, “দাদাকে সাপোর্ট করতে এসেছি। মনপ্রাণ থেকে চাই ও জিতুক। জিতে মানুষের জন্য কাজ করুক।”

Lok Sabha 2024: Irfan Pathan says Yusuf Pathan will serve people
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:May 10, 2024 11:05 am
  • Updated:May 10, 2024 2:54 pm

অরিঞ্জয় বোস: ‘বড়ে মিঁয়া তো বড়ে মিঁয়া, ছোটে মিঁয়া শুভান আল্লাহ।’ ভোটের উত্তাপ গায়ে মেখে কি এমনটাই মনে মনে বলছিল আপামর বহরমপুরবাসী?

নয়তো এমন ‘ডবল ধামাল’ হয় কী করে! যেখানে ‘পাঠান জিন্দা হ্যায়’-এর মতো অধীরগড়ের ২২ গজে দাপিয়ে ‘খেলছিলেন’ এক পাঠান (পড়ুন ইউসুফ পাঠান), সেখানে আচমকা কেন হাজির হবেন আরেক পাঠান, ইরফান পাঠান! বৃহস্পতিবার সেই জোড়া প্রাপ্তির সাক্ষী থাকল বহরমপুরবাসী। বহরমপুরে দোর্দণ্ডপ্রতাপ অধীর চৌধুরির (Adhir Ranjan Chowdhury) বিরুদ্ধে প্রাক্তন ‘নাইট’ তারকা ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করে অনেক আগেই চমক দিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘বড়ে মিঁয়া’ ভোটপ্রচারে নামতেই বহরমপুরবাসী অপেক্ষার প্রহর গুনছিল ‘ছোটে মিঁয়া’ ইরফান পাঠানের (Irfan Pathan) আগমনের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘ভোটে লড়তে চাই’, জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল

অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তব হল বৃহস্পতিবার। ‘দাদা’ ইউসুফকে সমর্থন করতে আচমকাই হাজির ‘ভাই’ ইরফান। সকালে কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে করে বহরমপুরে হাজির ভারতের প্রাক্তন বাঁ-হাতি পেসার। তাঁর আগমন ঘিরে জনমানসে প্রত্যাশার পারদ চড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে। জমকালো ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছিল অধীরদুর্গ-খ্যাত বহরমপুর। অবশেষে তিনি এলেন। শুধু এলেন না, দেখলেন এবং জয় করলেন জনতার হৃদয়। যা দেখে আপ্লুত দাদা ইরফানও। হেলিপ্যাডেই ইরফানকে ঘিরে উচ্ছ্বাস বাঁধ ভাঙল জনতার। সেই উচ্ছ্বাসের মধ্যে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলেন দুই ভাই। তৈরি হল এক আবেগঘন মুহূর্ত। সেখান থেকে সটান হোটেল। নিভৃতে চলল ‘পাঠান ব্রাদার্স’-এর একান্ত কথোপকথন। কী কথা হল দুজনের মধ্যে? সেই ‘সিক্রেট’ অবশ্য নিজের বোলিং অস্ত্রের মতোই আস্তিনে লুকিয়ে রাখলেন ইরফান। মাথায় টুপি। মুখে চাপদাড়িতে ঝকঝকে উপস্থিতি।

Advertisement

ক্রিকেটের গণ্ডি ছাড়িয়ে দাদা ইউসুফ আরও বৃহত্তর পরিসরে লড়াইয়ের ময়দানে। যেখানে ২২ গজের চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। হলই বা ভিন্ন। অকুতোভয় শোনায় ইরফানকে। দাদার হয়ে ব্যাটন ধরেই ‘ছোটে মিঁয়া’র গলায় আত্মবিশ্বাসী সুর, “দাদাকে সাপোর্ট করতে এসেছি। মনপ্রাণ থেকে চাই ও জিতুক। জিতে মানুষের জন্য কাজ করুক।” কিন্তু এ তো ব্যাট-বলে ক্রিকেট-যুদ্ধ নয়, রাজনীতির লড়াই। যেখানে প্রতিপক্ষ ‘হেভিওয়েট’, বহরমপুরের ‘রবিনহুড’ খ্যাত অধীর চৌধুরী। পারবেন ইউসুফ ‘চালিয়ে খেলতে’? যেমনটা বুক চিতিয়ে লড়তেন ভারতের জার্সিতে কিংবা কেকেআরের হয়ে ইডেন উদ্যানে? ইরফানের পাল্টা ‘রিভার্স সুইং’, “আমার দাদা রাজনীতি করতে তো আসেনি। এসেছে কাজ করতে। ও তো রাজনীতির লোক নয়। ও স্পোর্টসম্যান। খেলার দুনিয়ার মানুষ। ও জিততে এসেছে। জিতে মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছে।” ভোটযুদ্ধে জিততে দিনরাত এক করছেন বিশ্বকাপজয়ী ইউসুফ (Yusuf Pathan)। দাদার এই নাছোড় মনোভাবে মজেছেন ইরফানও। আইপিএলের (IPl 2024) ধারাভাষ্যের ফাঁকে তাঁর চোখও বঙ্গের ভোট তরজায়। দুঁদে রাজনীতিবিদের ঢঙেই বলে গেলেন, “গত একমাস ওর সঙ্গে আমাদের, পরিবারের কারও দেখাসাক্ষাৎ নেই। দিনরাত এক করে নিজের কেন্দ্রে পড়ে রয়েছে। দিনে ১০-১২ ঘণ্টা করে প্রচার করছে। আর মানুষের উপস্থিতি দেখেছেন? ভালোবেসে বহরমপুরের মানুষ ওকে আপন করে নিয়েছে। মনে হচ্ছে ওর সঙ্গে কতদিনের সম্পর্ক এই মাটির। এই ভালোবাসার প্রতিফলন ভোটের রেজাল্টে দেখতে পাবেন। মানুষের আশীর্বাদ ওর সঙ্গে রয়েছে। ও জিতবে। মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে ও কাজ করবে।”

[আরও পড়ুন: রেভান্না সেক্স স্ক্যান্ডালে নয়া মোড়, অভিযোগ করতে জোর করা হয়েছিল, বিস্ফোরক ‘নির্যাতিতা’]

আর ইউসুফ? আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) হয়ে প্রথম মরশুমে মাতিয়ে দিয়েছিলেন ২২ গজ। দাদা-ভাইয়ের যুগলবন্দি তুরুপের তাস হয়ে উঠেছিল তৎকালীন ভারত অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টের। বহরমপুরের ‘ভোটবাক্সে’ কি ফ্যাক্টর হবেন ‘পাঠান-ব্রাদার্স’? অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) ভোটব্যাঙ্কে ধস নামাতে পারবেন? ভাইকে নিয়ে যখন বহরমপুরের বেলডাঙা থেকে রোড শো শুরু করলেন, তখন কাতারে কাতারে মানুষ। সঙ্গে ছিলেন অরূপ চক্রবর্তী। পাশাপাশি ছিলেন স্থানীয় বিধায়করা এবং তৃণমূলের জেলানেতৃত্ব। চারিদিক লোকে লোকারণ্য। আর তাই দেখে চোখ চকচক করে ওঠে বহরমপুরের তৃণমূল পদপ্রার্থীর। ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে ইউসুফ বলেন, “ওর সঙ্গে প্রায় একমাস পর দেখা হল। বহরমপুরের মানুষ উদগ্রীব হয়ে ছিল ইরফানকে দেখার জন্য। আমার ভালো লাগছে, ও প্রবল ব্যস্ততার মধ্যেও আমাকে সমর্থন করতে এখানে উপস্থিত হয়েছে বলে। ও নিজের চোখেও দেখল, কত মানুষের ভালোবাসা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। এই ভালোবাসার কোনও তুলনা নেই।” সব মিলিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ইউসুফ-ইরফান, স্বপ্ন দেখছে বহরমপুরবাসী। ‘ঝুমে জো পাঠান’-এর দমকা হাওয়া গায়ে লাগল বলে!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ