Advertisement
Advertisement

Breaking News

নীতীন

ঐতিহাসিক জয় হবে, আত্মবিশ্বাসী নাগপুরের ‘স্বপ্নপূর্তি’ নীতীন গড়করি

উনিই বদলে দিয়েছেন নাগপুরকে, বিজেপি নেতার সম্পর্কে বলছেন স্থানীয়রা।

BJP candidate Nitin Gadkari is confident of increasing his margin.
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:April 8, 2019 2:22 pm
  • Updated:April 8, 2019 2:22 pm

সৌরভ দত্ত, নাগপুর: ২০১৪ সালের লোকসভায় জয় এসেছিল ২ লাখ ৮৪ হাজারেরও বেশি ভোটে। এবার সেই ব্যবধান আর বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন শহর নাগপুরের রূপকার তথা কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী নীতীন গড়করি। আত্মবিশ্বাসী গলায় বলছেন, ঐতিহাসিক জয় আসবে। তাঁর ভোট প্রচারে সঙ্গী হয়ে তারই যেন কিছুটা আভাস পাওয়া গেল সোমবার।

[আরও পড়ুন- জঙ্গি সংগঠনগুলিকে অর্থসাহায্য, হুরিয়ত নেতা মীরওয়াইজকে তলব এনআইএয়ের]

নাগপুর-পূর্ব লোকসভা আসনের অন্তর্গত লক্ষ্মীনগর ও বাজাজনগর এলাকাগুলো শহরের অভিজাত এলাকা বলেই পরিচিত। সোমবার এখানে দিয়ে কাড়া-নাকাড়া বাজিয়ে ও ডিজে-তে বিজেপির থিম সং চালিয়ে মিছিল যখন যাচ্ছে তখন আশপাশের বাড়িগুলোর জানলা ও ছাদে থিকথিক করছে কালো মাথার ভিড়। রাস্তার দুধারেও দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রচুর মানুষ। তাঁরা সবাই হাতে থাকা ফুল ছুঁড়ে দিচ্ছেন নীতীন গড়করিকে লক্ষ্য করে। ৫০০০ লোকের ওই প্রচার মিছিল কিছুটা দূরে এগিয়ে ধনতলি এলাকায় পৌঁছে চোখে পড়ল একটি স্কুল। তার দেওয়ালে বাংলায় লেখা দীননাথ বিদ্যালয়। আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে প্রচুর বাঙালির বাস ছিল এখানে। বর্তমানে তার সিকিভাগও আর নেই। কিন্তু, তাঁদেরও সবার পছন্দের তালিকায় একদম উপরে রয়েছে নীতীন গড়করির নাম। তাঁর প্রচার মিছিল দেখতে তাই বাড়ির ছাদের পাশাপাশি সবাই ভিড় জমিয়েছিলেন রাস্তাতেও।

Advertisement

[আরও পড়ুন- হিন্দুত্ব নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, উর্মিলার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা বিজেপির]

গতবার এই আসন থেকে লোকসভা ভোটে জিতে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও জাহাজমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীন গড়করি। সেই দায়িত্ব যেমন ভালভাবে সম্পন্ন করেছেন তেমনি নিজের লোকসভা আসনের অন্তর্গত সব জায়গারই প্রায় খোলনলচেই বদলে দিয়েছেন তিনি। আর এই উন্নয়নের হাতিয়ারই তাঁকে বিপুল পরিমাণ ভোটে জিততে সাহায্য করবে বলেই জানাচ্ছেন অটোচালক গৌতম জোঢাপে, ব্যবসায়ী শান্তিরাম সহায় বা ঠিকা শ্রমিক তুকারাম বিড়ের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

[আরও পড়ুন-উপগ্রহ ধ্বংসকারী ’মিশন শক্তি’র ভিডিও প্রকাশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের]

অটোচালক গৌতমের কথায়, “চোখের সামনে শহরটাকে বদলে দিয়েছেন উনি। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ যে কাকে বলে তা করে দেখিয়েছেন উনি। তাই আমরা ওনাকে ছাড়া কাউকে ভোট দেওয়ার কথা ভাবতেই পারি না।” পেশায় টাইলস ব্যবসায়ী শান্তিরাম সহায় বলছেন, “শহরের রাস্তাঘাট যেমন কংক্রিটের হয়েছে তেমনি বেড়েছে আমাদের ব্যবসাও। শহরের অন্যান্য পেশার মানুষরাও সুফল পাচ্ছেন তাঁর কাজের। সবার আর্থিক অবস্থা এতটা ভাল হয়েছে যে প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই নিদেনপক্ষে একটা বাইক রয়েছে। ফলে সরকারি যানবাহনের আর দরকার পড়ে না। আর এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সাংসদের জন্য।” গৌতম, শান্তিরাম ও তুকারামরা গত সাড়ে তিনবছরে শহরের বুকে মেট্রো চলতে দেখেছে। এখনও পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তায় মেট্রো চালু হলেও বাকি ৩২ কিলোমিটারে কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি তা চালু হয়ে যাবেও বলে মনে করছেন গৌতমরা। মহারাষ্ট্রে ক্ষমতায় থাকাকালীন মিহান এলাকায় শিল্পতালুক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু, তা বাস্তবায়িত হয়েছে গড়করির হাত ধরে। এখন সেখানে বড় বড় বিদেশি কোম্পানিগুলোও কারখানা তৈরি করতে এগিয়ে আসছে। আর এই সমস্ত কিছুই ইউএসপি নীতীন গড়করির।

[আরও পড়ুন- কপালে জুটেছে ডি-ভোটার তকমা, অসমে ভোট দিতে পারবেন না ১.২ লক্ষ মানুষ]

স্থানীয় ভাষায় তাঁকে ‘স্বপ্নপূর্তি’ বলে ডাকেন নাগপুরের মানুষ। তা যে ১০০ শতাংশ সত্যি তা মানছেন সমাজের একদম প্রান্তিক শ্রেণিতে থাকা ঠিকা শ্রমিক তুকারাম বিড়েও। বিরোধী শহরে সেভাবে রোজগারের জায়গা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ জানালেও তা মানতে চাইছেন তিনি। উলটে তাঁর দাবি, নিতিন গড়করির কর্মকাণ্ডে উপকৃত হয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। তাই এই আসন থেকে তাঁর জয় নয় ব্যবধান কতটা বাড়ল সেটাই দেখতে চাইছে সবাই।

[আরও পড়ুন-কপালে জুটেছে ডি-ভোটার তকমা, অসমে ভোট দিতে পারবেন না ১.২ লক্ষ মানুষ]

এবার নাগপুরের এই আসনে নীতীন গড়করির বিরুদ্ধে লড়াই নেমেছেন কংগ্রেস-এনসিপি জোটের প্রার্থী নানা পাটৌলে। গত লোকসভায় মহারাষ্ট্রের ভান্ডারা-গোন্ডিয়া আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, এবার দলবদল করে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস-এনসিপির হয়ে। বিজেপি ছাড়ার পর মহারাষ্ট্রের কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁকে দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবেও তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। কিন্তু, এই প্রচেষ্টা কাজে আসবে না বলে মন্তব্য অটোচালক গৌতমের। তিনি বলছেন, “কয়েকদিন আগেই বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে এসেছেন নানাভাই। আবার কৃষকদের দাবি নিয়ে বামপন্থীদের সঙ্গে আন্দোলনও করেছেন। তাই তিনি যে কোনদিকে তাই এখনও বুঝতে পারছে না মানুষ। পাশাপাশি বারবার দল বদলানোর জন্য তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতাও তলানি এসেছে ঠেকেছে। তাই যতই তাঁকে দলিতদের প্রতিনিধি হিসেবে সবার সামনে পরিচিত করার চেষ্টা হোক না কেন, কোনও লাভ হবে না। গতবারের থেকেও বেশি ভোটে জিতবেন আমাদের ‘স্বপ্নপূর্তি’।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ