রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: কাছে-পিঠে কয়েক দিনের জন্যে বেড়ানোর ইচ্ছে। গন্তব্য সমুদ্র হলে অধিকাংশ বাঙালির কাছে দিঘা প্রথম পছন্দ। যারা একটু ভিড় এড়াতে চান তাদের গন্তব্য হয় মন্দারমণি। তবে সেই সব উৎসাহীর কাছে পূর্ব মেদিনীপুরের এই সৈকত এখন পুরনো। তাজপুর নিরিবিলি হলেও সেই রূপ আর নেই। জুনপুটও ঘোরা। যারা এর বাইরেও সমুদ্র এবং বিস্তৃত বেলাভূমি চান তাদের জন্য টোটোয় রইল এই প্রতিবেদন।
[নদীর এপারে হাতি ওপারে আপনি, ডামডিম যেন স্বপ্নের ঠিকানা]
জুনপুটের কাছেই রয়েছে এই বিচ বগুড়ান জলপাই। কাঁথি ১ নম্বর ব্লকের এই নতুন ট্যুরিস্ট স্পট খুব বেশি দূরেও নয়। কাঁথি শহর থেকে বগুড়ান জলপাইয়ের দূরত্ব মেরেকেটে ১৫ কিলোমিটার। টোটো বা ট্রেকারে সহজে যাওয়া যায়। মিনিট ৪৫ লাগবে। ভাড়াও সাধ্যের মধ্যে। নিজের গাড়ি থাকলে তো কথাই নেই। এ পর্যন্ত যোগাযোগের বিষয়টি জানলেন। এবার আসল কথায় আসা যাক। তাহলে কেন যাবেন তথাকথিত পাণ্ডববর্জিত এলাকায়?
[গড়পঞ্চকোট কথা: যেখানে নাগালে প্রকৃতি, পিছনে ইতিহাস]
বগুড়ান জলপাই আপনাকে স্বাগত জানাতে তৈরি লাল কাঁকড়া। একেবারে রেড কার্পেটের মতো। ঢুকলেই বুঝে যাবেন কেন এই বিচ অন্য জায়গার থেকে আলাদা। একেবারে নিরিবিলি। প্রকৃতি এখানে এতটুকু বদলায়নি। অসংখ্য ঝাউ গাছের সঙ্গে মানানসই এই লাল কাঁকড়া। তবে ধরতে গেলেই ফুরুৎ করে পালাবে। দূষণের দাপট এবং জীব বৈচিত্র্যের কারণে রাজ্যের অন্যান্য বিচ থেকে কাঁকড়া উধাও হয়ে গেলেও বগুড়ানে তা এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
[পথের বাঁকে ইতিহাস, ডালিমগড় চেনেন কি?]
সবে গড়া উঠা এই স্পট এখনও তাই নাবালক। সমুদ্রের জল কতদূর আসবে তার ঠাহর করাও তাই পর্যটকদের কিছুটা মুশকিল। তবে দিঘার তুলনায় এখানকার সমুদ্র কিছুটা শান্ত। রাত্রিবাসের জন্য একটি গেস্ট হাউস রয়েছে। একেবারে ঝকঝকে। যা চাইবেন তা মোটামুটি রেধে বেঁড়ে খাওয়াবে। ইচ্ছে হলে নিজেরাও রান্না করতে পারেন। অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হল ঝাউ জঙ্গলের মধ্যেই নিশিযাপন করতে পারেন। সেখানে রয়েছে টেন্টের ব্যবস্থা। ঝাউ জঙ্গল এবং জায়গাটা একটু ফাঁকা হলেও নিরাপত্তার তেমন চিন্তা নেই। কারণ পুলিশি টহল থাকে। এই বিচের কাছে তৈরি হয় শুঁটকি মাছ। যাদের এই মাছ নিয়ে আগ্রহ তাদের কৌতুহল মিটবে। শুঁটকি মাছ শুধু নয় বিচে ঘুরতে ঘুরতে হয়তো দেখে পাবেন কোনও জেলের। যার কাছে একেবারে জল টাটকা মাছ পাবেন। এই ট্যুরিস্ট স্পটের একমাত্র রিসর্টে থাকতে গেলে অনলাইন বুকিং করা যায়। পৌঁছেও কথা বলতে পারেন। দিন পিছু খরচ ১০০০ টাকা। খাবার আলাদা।